করোনা যুদ্ধের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে জীবন বাজি রেখে লড়ছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁরাই এখন বড় সমস্যায়। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অর্থাৎ এইমস-এর স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা আর দু’দিন পরেই। দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে এজন্য নিজেদের তৈরি করেছেন সারা জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু প্রতিষ্ঠান নিয়ম জারি করেছে, কেবল মাত্র অ্যাসিম্পটম্যাটিক হলেই অর্থাৎ করোনার কোনও উপসর্গ না থাকলে, তবেই বসা যাবে এই পরীক্ষায়।
শুধু তাই নয়, গত কয়েক দিনে করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। এই ঘোষণাতেই বিপদে পড়েছেন চিকিৎসকরা। উপসর্গ লুকিয়ে বা মিথ্যে বলে পরীক্ষা দিতে গেলে, ধরা পড়লে আইনি সাজা হবে বলে জানানো হয়েছে।
শুধু চিকিৎসকরা নন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পরীক্ষা দেবেন এমন নার্সদেরও একই অবস্থা। এমডি, এমএস, ডিএম এবং এমসিএইচ এই প্রতিটি কোর্সেরই পরীক্ষা দেওয়া হবে না দেশের অসংখ্য জুনিয়র ডাক্তার, হাউস স্টাফ এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকের।
দেশের ১৫০ টি সেন্টারে এই পরীক্ষা হয় প্রতি বছর। কিন্তু এই বছর কিছু বিশেষ নির্দেশিকা জারি হয়েছে, ১১ জুনের আসন্ন পরীক্ষার জন্য। তাতেই বলা হয়েছে, উপসর্গহীন পরীক্ষার্থীরাই পরীক্ষা দিকে পারবেন। কোনও কোভিড রোগীর সংস্পর্শে না আসা নিয়েও মুচলেকা দিতে হবে তাঁদের। কেউ মিথ্যে বলেছেন বলে জানা গেলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে তাঁর বিরুদ্ধে।
তথ্য বলছে, এই নির্দেশিকা মানতে গেলে মোট পরীক্ষার্থীর ৭০ শতাংশই এইমসের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা বসতে পারবেন না। কারণ দেশের সমস্ত প্রান্তের প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসক, ইন্টার্ন, হাউস স্টাফরা নিত্য করোনা ওয়ার্ডে ডিউটি করছেন, রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন। বহু চিকিৎসক ইতিমধ্যেই কোভিডে আক্রান্তও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা পিছানোর দাবি করেছে অনেকেই।
দিল্লির বৈভব ত্রিবেদী নামের এক চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এটা কি ঠিক হচ্ছে? আমি মানুষের জন্য সেবা করছি তার এই প্রতিদান? একদিকে চিকিৎসকদের হিরো বানানো হচ্ছে, ফুল দিয়ে পুজো করা হচ্ছে, অন্যদিকে এটা কী? তাদের পরীক্ষাই দিতে দেওয়া হবে!
গুড়গাঁওয়ের রচিত সিঙঘানিয়ার কথায়, আমরা যারা কোনও উপসর্গহীন, তারাও নিজেদের অজান্তেই বহণ করতে পারি রোগের জীবাণু। পরীক্ষাকেন্দ্রে সেক্ষেত্রেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ফলে এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা পিছোনাই ঠিক হতো।