এত বড় দেশ। এত বিপুল জনসংখ্যা। সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করলে যে ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে সেই আশঙ্কা ছিলই। লকডাউনের শর্ত শিথিল হওয়ার পর থেকে ক্রমশই যেন তা প্রমাণ দিতে শুরু করেছে। করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এবার স্পেনকেও টপকে গেল ভারত।
শনিবার রাত পর্যন্ত ভারতে ২ লক্ষ ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আমেরিকার জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিড ট্র্যাকার অনুযায়ী স্পেনে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৪১ হাজারের কিছু বেশি। ভারত সেই সংখ্যাকে টপকে গিয়েছে।
গোটা বিশ্বে যে দেশগুলি কোভিডে সবথেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে এখনও শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা। সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লক্ষ ছাড়িয়েছে। তার পর রয়েছে ব্রাজিল। সেখানে ৬ লক্ষ ১৪ হাজার মানুষ এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ব্রাজিলের পরে রয়েছে রাশিয়া। আর তার পরেই ব্রিটেন ও ভারত।
শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে বুলেটিন প্রকাশ করেছিল তাতে দেখা গিয়েছে, শুক্রবার থেকে শনিবার সকালের মধ্যে আরও ৯৮৮৭ জনের মধ্যে কোভিড পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত একদিনে এটাই সর্বাধিক বৃদ্ধি।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের বুলেটিনেও দেখা গিয়েছে যে বাংলায় এদিন সবথেকে বেশি কোভিড পজিটিভ রোগী পাওয়া গিয়েছে ৪৩৫ জন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা জুনের মাঝামাঝির আগে এই বৃদ্ধির হার আরও বেড়ে যাবে। সোমবার ৮ জুন থেকে কনটেইনমেন্ট জোনের বাইরে লকডাউনের শর্ত আরও শিথিল হচ্ছে। খুলে যাচ্ছে, শপিং মল, ধর্মস্থান, রেস্তোরাঁ ও হোটেল। স্বাভাবিক ভাবেই সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, এই পরিস্থিতি দুটিই মাত্র বিকল্প রয়েছে। এক সোশাল ডিস্টেন্সিং ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যাস বজায় রাখা। অর্থনৈতিক কারণে শপিং মল, রেস্তোরাঁ, অফিস, কল কারখানা, নির্মাণ শিল্পে কাজ শুরু হলেও সেখানে শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কমবে। দুই, টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো।
দেশে এখন দিনে ২ লক্ষের বেশি টেস্ট হচ্ছে। জুনের মধ্যে সেই সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। তা ছাড়া রাজ্য সরকারগুলিকেও বলা হয়েছে, কোভিড চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো বাড়াতে। আরও বেশি সংখ্যক হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।
তবে এ সবের মধ্যেও ইতিবাচক হল, কোভিডে মৃত্যুর হাল্পে নিরিখে ভারতের অবস্থান অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভাল। এ দেশে কোভিড আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার মাত্র ২.৮ শতাংশ। তা ছাড়া করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৪৮ শতাংশ।