চলতি বছর বৈশাখ মাসে সেভাবে দেখা যায়নি গ্রীষ্মের দাপট। তবে জ্যৈষ্ঠের শেষদিকে আদ্রতা জনিত অস্বস্তিতে ভুগছিল গোটা দক্ষিণবঙ্গ। শনিবার এবং রবিবার ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। শেষমেষ এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিয়ে রবিবার বিকেল থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয় কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে বইতে থাকে ঝোড়ো হওয়া।
চলতি বছর অতিরিক্ত তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস করতে হয়নি শহরের বাসিন্দাদের। বর্ষা দোর গড়াতে। সাধারণত আট জুন বর্ষা রাজ্যে প্রবেশ করে। বঙ্গোপসাগরের ওপরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের হাত ধরে ইতিমধ্যেই কেরলে নির্দিষ্ট সময়ে প্রবেশ করেছে বর্ষা। এই রাজ্যেও নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষার প্রবেশ করবে এমনটাই আশাবাদী আবহাওয়াবিদরা।
কিন্তু গত দু’দিন ধরে আদ্রর্তা জনিত অস্বস্তিতে ভুগছিল বঙ্গবাসী। রবিবার দুপুর থেকেই শহরের আকাশ ছিল মেঘলা। বিকেল হতেই কালো মেঘে ঢেকে আসে শহরের আকাশ। এর পরেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয় শহর জুড়ে।
রবিবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ ছিল ৪৪ থেকে ৮৬ শতাংশ। শহরে বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে মিলিমিটারে যথাক্রমে মানিকতলায় ৪৫, বেলগাছিয়ায় ৫৫, ধাপাতে ৫৮, তপসিয়াতে ৬৮, পামার ব্রিজে ৮০, ঠনঠনিয়াতে ৩৫, বালিগঞ্জে ৭৭, মোমিনপুরে ৬৫, চেতলাতে ৪০, কালীঘাটে ৬৫।
এদিকে সন্ধ্যে নাগাদ জল জমে ঠনঠনিয়া, পার্কস্ট্রিট, কলেজস্ট্রিট সহ শহরে বেশ কয়েকটি এলাকাতে। জল বার করতে পাম্পিং স্টেশনগুলি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। শুধু শহর কলকাতাতেই নয়, এদিন বৃষ্টিপাত হয় পুরুলিয়া, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়াতে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তঙ্গেভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
এদিকে আগামী দু’দিনে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে প্রবেশ করবে বর্ষা। এছাড়াও বিহার-উত্তরপ্রদেশের ওপর অবস্থান করছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। এই ঘূর্ণাবর্তটির বর্তমান অবস্থান পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর। সোমবার ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে পরিণত হবে। যার দরুন বুধবার থেকে বাংলা এবং উড়িষ্যাতে বাড়বে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। এই নিম্নচাপের দরুন বঙ্গে প্রবেশ করবে বর্ষা এমনটাই মনে করছে আবহাওয়াবিদরা।