নিজস্ব প্রতিনিধি – উনিশের লোকসভা নির্বাচনকে মোস্ট চ্যালেঞ্জিং হিসেবেই দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তৃণমূল সুপ্রিমোর টার্গেট ‘মোদিবাবু’র বিদায়। সেই লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজ্যের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেন তিনি। যা দিয়ে তিনি বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশে স্কোর করার ভিকট্রি চিহ্নও দেখিয়ে দিলেন। তবে শুধু এই রাজ্যেই নয়, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, অসম এবং আন্দামানে প্রার্থী দিচ্ছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বাস, এই নির্বাচন ইউনাইটেড ইন্ডিয়া বনাম আইসোলেটেড বিজেপি’কে কোণঠাসা করতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধির তোলা রাফায়েল ইস্যুর প্রতি একশো শতাংশ সমর্থন জানিয়েছেন মমতা।
মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার আগে বিজেপি’র পাঁচ বছরের অপশাসনের চিত্র তুলে ধরেন তৃণমূল নেত্রী। যার মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করেন জওয়ানদের রক্ত নিয়ে রাজনীতি করার প্রসঙ্গ। এছাড়া নোটবন্দির মতো স্ক্যাম নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নোটকেও পেশ করেন সর্বসমক্ষে। মোদির আমলে ২৬০ শতাংশ বেকারি বৃদ্ধি, কৃষকের আত্মহত্যা, নিরপেক্ষ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ওপর খবরদারি, উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেশকে টুকরো করার প্রবণতার উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন সরকার এলে তাদের প্রধান লক্ষ্য হবে কাশ্মীরে শান্তি ফিরিয়ে আনা। মমতা বিশ্বাস করেন, এই রাজ্যে জঙ্গলমহলে, পাহাড়ে যদি শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলে কাশ্মীরে কেন নয়? কেন্দ্রের নতুন সরকারের নির্বাচনী ইস্তেহারে থাকবে সীমান্তে শান্তিপ্রতিষ্ঠা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি।
মঙ্গলবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে এদিন তিনি প্রথমেই নিহত জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন পাঠানকোট, উরি, পুলওয়ামায় এত জওয়ান শহিদ হল? জওয়ানদের পোশাক পরে বিজেপি যে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন মমতা। এইভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা প্রতিহত করতে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ভোটের সময় যাতে চাটার্ড প্লেন, হেলিকপ্টারে করে টাকা এনে এই রাজ্যে ছড়ানো না হয়, সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিজেপি সরকারি উন্নয়নের টাকা প্রচরের কাজে লাগাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন গণতন্ত্র মানুষের জন্য, অর্থের জন্য নয়। এদিন এই রাজ্যের নির্বাচনকে সাত দফায় টেনে নিয়ে যাওয়ার নেপথ্যেও বিজেপি’র হাত আছে বলেও মনে করেন। অন্দ্রপ্রদেশ, গুজরাত ও কেরলে এই রাজ্যেরই কাছাকাছি সংখ্যার আসন থাকলেও সেখানে এক দফাতেই নির্বাচন হচ্ছে। কিন্তু বাংলা, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ যেখানে বিজেপি বিরোধিতার একটা শক্ত ভিত্তিভুমি রয়েছে, সেখানেই নির্বাচনের সময়সূচীকে টেনে বেড়ানো হয়েছে। যার ফলে মে মাসের প্রচণ্ড গরমে এই রাজ্যে ভোট করাতে হবে।
তবে এর মধ্যেও মমতা উইনাইটেড ফ্রন্টের ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে শরিক হতে পারেন। মায়াবতী ও অখিলেশ ডাকলে বারাণসীতেও যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই বারাণসীতেই উনিশে মে নির্বাচনে লড়বেন নরেন্দ্র মোদি। তবে উনিশের এই নির্বাচনের এই দিনটাতেই বিজেপি’র ভোট বাক্সের কফিনে শেষ পেরেক পোঁতা হবে।