পরিযায়ীর পর প্রবাসীদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরানো নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে ফের সংঘাত কেন্দ্রের। প্রবাসীদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে দোষারোপ করে উভয় পক্ষের মধ্যেই অব্যাহত ট্যুইটযুদ্ধ। কেন্দ্রের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে বিদেশে আটকে থাকাদের ঘরে ফেরাতে এখনও উদ্যোগী হয়নি রাজ্য। এই অভিযোগ নস্যাৎ করল নবান্ন।
শুক্রবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে বিদেশে আটকে থাকা এই রাজ্যের বাসিন্দাদের ফেরাতে রাজ্য যে আগে থেকেই প্রস্তুত তা আগে থেকেই চিঠি দিয়ে কেন্দ্রকে জানিয়েছে রাজ্য। ‘বন্দে ভারত মিশন’-এর আওতায় প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে যে সব বিমান দেশে ফিরছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের নাম নেই কেন? এই প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ট্যুইট করেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রবাসী ভারতীয়দের ফেরানো নিয়েও বাংলার সঙ্গে কেন্দ্র পক্ষপাতিত্ব করছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
‘বন্দে ভারত মিশন’-এ প্রবাসীদের নিয়ে কোন বিমান কোথায় নামছে তার তালিকা দিয়ে ট্যুইটাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, জর্জিয়া থেকে গুজরাতে ফেরার লোক রয়েছে, কিরগিজস্তান থেকে বিহারে ফিরছেন মানুষ। অথচ বিমানযোগে কলকাতায় তথা বাংলায় কেউ ফিরতে চাইছেন না। এটা কি সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য? এই অবিচার বন্ধ করুন।
বিজেপিকে মিথ্যেবাদী বলেও টুইটে আক্রমণ করেন পার্থবাবু। পার্থবাবুর ট্যুইটের উত্তরে বৃহস্পতিবার রাতেই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব একটি টুইট করেন। তিনি লেখেন, বিদেশ মন্ত্রক রাজ্যগুলোর সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করে না। পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেসব বাসিন্দা বিদেশে আটকে রয়েছেন, তাদের সবাইকেই দেশে ফেরানোর জন্যই বলে বন্দে ভারত মিশন তৈরি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া ৩,৭০০ জন ইতিমধ্যেই দেশে ফেরার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
এই টুইটে অনুরাগ শ্রীবাস্তব লিখেছেন রাজ্য সরকার তাদের ফেরানোর জন্য সম্মতি দিলে এবং ফেরার পর তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেই সানন্দে কলকাতায় বিমান পাঠানো হবে। শুধু আকাশপথেই নয়, স্থলসীমান্ত দিয়েও প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলো থেকেও বাংলার মানুষদের ফেরাতে সাহায্য করবে কেন্দ্র। আশা করি, খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে রাজ্যের জবাব মিলবে।
এই ট্যুইটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার এটাই বোঝাতে চেয়েছে যে, প্রবাসীদের ঘরে ফেরানোর বিষয়ে রাজ্য সরকারের উদ্যোগের অভাব রয়েছে। এই বক্তব্যকে খণ্ডন করতে শুক্রবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর একটি টুইট করে। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া মানুষদের স্বাগত জানাতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রবাসীদের ফেরানোর বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে এবং দেশে ফিরলে তাদের কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা কী হবে, সেই বিষয়ে অনেক আগেই কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়েছে নবান্ন থেকে।
এই বক্তব্যের প্রমাণ স্বরূপ চলতি মাসের শুরুতে মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হার কেন্দ্রকে লেখা দু’টি চিঠিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রদফতরের ট্যুইটে। যে চিঠির একটি পাঠানো হয়েছিল বিদেশ দফতরের অতিরিক্ত সচিব অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়কে এবং অন্যটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয়কুমার ভাল্লাকে।