কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের এক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গিয়েছিলেন হেসুর ও তিরুপুর শহরে। দুটি শহরই তামিলনাড়তে অবস্থিত। সেখানে অনেক শিল্প আছে। তিরুপুর মূলত বয়ন শিল্পের জন্য বিখ্যাত। হােসুরে রয়েছে নানা ধরনের শিল্প। দু’টি শহরেই কারখানায় যে শ্রমিকরা কাজ করেন, তাঁরা এসেছেন বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে।
অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে কারখানা মালিকরা বললেন, ভিন রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের নিয়ে প্রায়ই মুশকিলে পড়তে হয়। তাঁরা মাঝে মাঝেই দীর্ঘদিনের জন্য বাড়িতে চলে যান। শুধু তাই নয়, কয়েক হাজার কিলােমিটার দূরের রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের মজুরিও দিন দিন বাড়ছে।
অর্থনৈতিক উপদেষ্টা তখন কারখানা মালিকদের প্রশ্ন করলেন, শ্রমিকরা যে যে রাজ্য থেকে আসছে, আপনারা সেখানে কারখানা তৈরি করেন না কেন? তাহলে তাে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সমস্যা হবে না। বিহার, ওড়িশা কিংবা ঝাড়খণ্ডে কারখানা তৈরি করতে আপনাদের অসুবিধা কোথায়?
কারখানা মালিকা বললেন, ওই রাজ্যগুলি একেবারেই নিরাপদ নয়। সেখানে পুঁজি তাে দূরের কথা, জীবনের পর্যন্ত গ্যারান্টি নেই। সেই তুলনায় দক্ষিণ ভারত অনেক শান্তিপূর্ণ।
করােনা মহামারীর ফলে এখন বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। পরিযায়ী শ্রমিক’রা বাড়ি চলে গিয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগই সম্ভবত ফিরে আসবেন না। তাঁরা নিজেদের গ্রামে ফিরে গিয়ে ছেটখাট দোকান খুলে বসেছেন। আগামী দিনে খুব অভাবে না পড়লে তাঁরা হাজার হজার কিলােমিটার দূরে চাকরি করতে আসবেন না।
দক্ষিণ ভারতের কারখানাগুলি তাহলে কী করবে? বাধ্য হয়ে তাদের বিনিয়ােগ করতে হবে বিহার, ঝাড়খণ্ড কিংবা ওড়িশায়। সেখানে কারখানা বানানাের মতাে জমির অভাব নেই। কিন্তু সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারগুলিকে সদিচ্ছা দেখাতে হবে। শিল্পপতিরা যে বিপদের ভয় পাচ্ছেন, তা দূর করতে হবে।