দিল্লি, ৭ মার্চ – বুধবার সুপ্রিম কোর্টে রাফায়েল মামলার শুনানি ছিল। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে রাফায়েল সংক্রান্ত নথি চুরি হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রের তরফ থেকে দেওয়া আদালতকে এই তথ্য নিয়ে তীব্র জলঘোলা হয়েছে। এবার এই বিষয়ে ফের সবর হলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি। প্রথম থেকেই তিনি রাফায়েল নিয়ে আক্রমণ করে আসভহেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের মুখমুখি হয়ে মোদির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, এই নথি চুরির কথা বলে মোদিজি রাফায়েল দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
রাহুল বলেন, প্রথমে শোনা গিয়েছিল রাফায়েল চুক্তি নিয়ে নাকি অপরাধমূলক কিছু হয়নি, তবে এখন জানা যাচ্ছে যে, চুক্তি সংক্রান্ত সকল নথি চুরি হয়ে গিয়েছে। এদিন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আদালতে সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে রাফায়েলর নথি চুরি হওয়ার জন্য সংবাদমাধ্যমগুলির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হোক। কিন্তু যে ব্যক্তি ৩০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁর বিরুদ্ধে কি তদন্ত হবে না’? রাফায়েল নথি ফাঁস এবং এই চুক্তির তছরুপ নিয়ে মন্তব্য করে কংগ্রেস সভাপতির আরও অভিযোগ, ‘যাঁরা অন্যায় করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত’।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তাঁর দাবি, ‘আপনারা আদালতে বলছেন যে রাফায়েল চুক্তি সংক্রান্ত সকল নথি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। তার মানে এটা দাঁড়ায় যে, নথিগুলি সবটাই সত্য ছিল এবং এই নথিগুলিতে এও লেখা ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদি এই চুক্তি নিয়ে দরদাম করেছিলেন, যাতে এই নথি সকলের হাতে না চলে আসে। এবার তারজন্য নথি চুরি হওয়ার গল্প ফাঁদছেন। তবে শুধু রাফায়েল নিয়ে নয়, এদিন রাহুল জোট, এয়ারস্ট্রাইক এবং পুলওয়ামা হামলা নিয়ে কথা বলেন।
লোকসভা নির্বাচনে জোট নিয়ে রাহুল গান্ধির বক্তব্য, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় জোট করা হচ্ছে, তবে দিলিতে জোট না করার সিদ্ধান্ত দলের সকলেরই ছিল’। এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে শহিদ জওয়ানদের পরিবারের তরফ থেকে বলতে শুনেছি। তাঁদের দাবি যে তাঁরা ব্যথিত এবং বালাকোটে আসলে কী ঘটেছে, তাঁরা জানতে চাইছেন কেন্দ্রের তরফ থেকে’।
রাফায়েল নিয়ে রাহুল গান্ধির অভিযোগের পাল্টা উত্তর দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুন জেটলি এবং আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। জেটলির অভিযোগ, ‘কংগ্রেস সভাপতি লাগাতার মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ভারতীয় সেনার ওপর ভরসা না রেখে পাকিস্তানের ওপর বেশি আস্থা রাখছেন তিনি। পাকিস্তানে টিআরপি বাড়াতে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুন জেটলি রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করেন যে, ‘রাহুল গান্ধি মোদি সরকারকে আক্রমণ করে আসলে কংগ্রেসের প্রতি নজর ঘোরাতে চাইছেন। কংগ্রেসকে প্রচারের আলোয় আনার জন্যই এই কৌশল নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি’।