জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমা আখতারকে অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে অনুসন্ধান কমিটি। উল্লেখ্য অনুসন্ধান কমিটির অন্যতম সদস্য রামকৃষ্ণ রামস্বামী ৮ মার্চ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন (সিভিসি) ১০ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে অফিস মেমোতে নাজমা আকতারের বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণের বিষয়টি খেলসা না করার কথা জানিয়েছে। রামস্বামী রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে সিভিসির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বয়ান উল্লেখ করে জানিয়েছে, নাজমা আখতারকে অবসর পরবর্তী বা পুনরায় কোনও সংস্থা, প্রতিষ্ঠানে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ করার জন্য বিবেচনা করা উচিত হবে। রামস্বামী তাঁর চিঠিতে অবশ্য আখতারের বিরুদ্ধে সিভিসি’র আপত্তির কারণ সমূহ বিস্তারিতভাবে জানানো হয়নি।
তিন মাস আগে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা উপাচার্য নাজমা আখতার দক্ষিণ দিল্লিতে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে পুলিশের অতি সক্রিয়তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। ১৫ ডিসেম্বর রাতে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে লাইব্রেরির মধ্যে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটানোর এক ভিডিও সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন। তিনি এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সওয়াল করার কথা জানান।
পরের দিন তিনি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢোকা ও তাণ্ডব চালানোর প্রতিবাদ করে বলেন, পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢোকে কোনও অনুমতি ছাড়াই যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তার সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবীণ আকিারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য রামকৃষ্ণ রামস্বামী, অধ্যাপক ডি পি সিং এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এস এ সিদ্দিকিকে উপাচার্য নিয়োগের জন্য অনুসন্ধান কমিটিতে নিয়োগ করা হয়েছিল ১৭ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে। ওই বছর অনুসন্ধান কমিটি তাদের দ্বিতীয় সভায় ১০৭ জন আবেদনকারীর মধ্যে হবে থেকে তেরোজনকে নির্বাচিত করে ২৮ নভেম্বর ২০১৮ বরুদ্ধে তারিখে। এদের মধ্যে থেকে তিন জনের নাম পাঠানো হয় জানানো রাষ্ট্রপতির কাছে। রাষ্ট্রপতি তিন জনের মধ্যে থেকে নাজমা লয়ের আখতাকে বেছে নেন এবং ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে দল্লিতে নিয়োগে অনুমোদন দেন।
রামস্বামী তাঁর চিঠিতে লেখেন, বিগত কয়েক মাসে আচার্য হিসেবে আপনি অন্তত দু’টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাজে সন্তুষ্ট না হতে পেরে তাঁদের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনের অফিস মেমোর বয়ানের গুরুত্ব বিবেচনা করে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই সতর্কতামূলক ও সমাধানমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানাই।
দিল্লি হাইকোর্ট নাজমা আখতারের নিয়োগের বিরোধিতা করে একটি আবেদনের ভিত্তিতে মানব সম্পদমন্ত্রক, নাজমা আখতার, বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের জবাব দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে ছয় সপ্তাহ্বে মধ্যে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ আগস্ট।