• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

চাইনিজ ভাইরাস ছড়িয়েছে বিশ্বে, সরাসরি চিনকে বিধলেন ট্রাম্প, করোনা নিয়ে তরজা

করোনাভাইরাসের জন্য দায়ী কে, প্রথমবার মুখ খুলেই বোমা ফাটালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোজাসুজি বলে বসলেন সারা বিশ্বে ত্রাস তৈরি করেছে যে মারণ ভাইরাস সেটা আসলে 'চাইনিজ করোনাভাইরাস'।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্প (File Photo: IANS)

করোনাভাইরাসের জন্য দায়ী কে, প্রথমবার মুখ খুলেই বোমা ফাটালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোজাসুজি বলে বসলেন সারা বিশ্বে ত্রাস তৈরি করেছে যে মারণ ভাইরাস সেটা আসলে ‘চাইনিজ করোনাভাইরাস’। ইঙ্গিতটা খুবই স্পষ্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগের আঙুল চিনের দিকেই, অর্থাৎ চিন থেকেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। 

সোমবার রাতে টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বে ব্যবসা বাণিজ্যের যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, যেসব শিল্পাঞ্চল, এয়ারলাইন্স ক্ষতিগ্রস্থ আমেরিকা তাদের পূর্ণভাবে সমর্থন করছে। কারণ এইসব কিছুই হয়েছে চিনা ভাইরাসের কারণে।’ 

দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ চলছেই। কখনও আমেরিকা দাবি করছে নোভেল করোনাভাইরাস আসলে রাসায়নিক মারণাস্ত্র, ছড়িয়েছে চিন থেকেই, আবার কখনও আমেরিকার দাবি উড়িয়ে চিন সোজাসাপটা আঙুল তুলে বলছে মার্কিন সেনাদের থেকেই উহানে ছড়িয়েছিল ভাইরাস। 

চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ানের টুইট থেকেই এই বিতর্ক শুরু হয়। লিজিয়ান দাবি করেছিলেন, মার্কিন সেনারাই উহানে বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এই মারণ ভাইরাসের জীবাণু। সেখান তেকেই চিনারা আক্রান্ত হতে শুরু করেন, পরে সেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। 

লিজিয়ানের কথায়, গত বছর অক্টোবরে উহানে আয়োজিত সপ্তম মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমে যোগ দিয়েছিলেন আমেরিকার অন্তত ৩০০ জন সেনা অ্যাথলেট। তখনই তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ফ্লুতে আক্রান্ত হন। পরে কয়েকজনের মৃত্যুও ঘটে। তখন বলা হয়েছিল নিছক জ্বর বা সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সেনাদের। পরে জানা যায়, তাঁরা সকলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

লিজিয়ানের দাবিকে পুরোপুরি উড়িয়ে না দিলেও মার্কিন সেনারা যে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন সেটা মেনে নেন মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর ডিরেক্টর রবার্ট রেডফিল্ড। এর পরেই চিনে আস্ফালণ আরও বেড়ে যায়। সরাসরি আমেরিকার দিকেই আঙুল তুলে চিন দাবি করে মারণাস্ত্রের ভুয়ো খবর রটিয়ে আমেরিকা নিজেদের আড়াল করতে চাইছে। কারণ এই ভাইরাসের জন্মদাতা তারাই। 

চিনের বিস্ফোরক দাবি সামনে আসার পরে নড়েচড়ে বসে গোটা বিশ্বই। শুরু হয় দুই দেশের একে অপরকে দোষ দেওয়ার পালা। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়, বিশ্বজোড়া মহামারীতে নাম জড়িয়েছে চিনের, তারাই সবচেয়ে বেশি সমালোচিত। তাই নিজেদের উপর থেকে বিপুল দোষের বোঝা নামাতে পাল্টা আমেরিকার দিকে আঙুল তুলছে।

চিনের দাবির জোরালো সমালোচনা করে সে দেশের সরকারি আধিকারিক ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও। আমেরিকার উপর মিথ্যা অভিযোগ চাপানো বন্ধ করার কথাও বলেন তিনি। এদিন টুইটারে পম্পেও বলেছে, ‘প্রচণ্ড অবিবেচকের মতো কাজ করছে চিন। এখন একে অপরকে দোষ দেওয়া বা গুজব ছড়ানোর সময় নয়। বরং ভাইরাসের মোকাবিলায় বিশ্বের সব দেশকে একে অপরের হাত ধরে চলতে হবে।’

মার্কিন বিদেশসচিব আরও বলেন, এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণকে বিশ্বজোড়া মহামারী ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। পম্পেও দাবি করেন, চিন যতই ধামাচাপা দিক সার্স-সিওভি-২ আসলে ‘উহান ভাইরাস’। চিনের ভৌগোলিক পরিবেশেই এই ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, এখন তার দাপটে গোটা বিশ্বেই শুরু হয়েছে মৃত্যুমিছিল।