গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের সঙ্গে দ্বিমত পােষণ করা মানে দেশদ্রোহিতা নয়। দেশব্যাপী সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে তৈরি হওয়া বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক গুপ্তের এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
‘ভিন্নমত এবং গণতন্ত্র’ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের এই বিচারপতি স্পষ্ট জানান, সরকার কোনও প্রতিবাদী কণ্ঠরােধ করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত তা হিংসার আকার ধারণ করে।
দীপক গুপ্ত আরও বলেন, সরকার সবসময় সঠিক হতে পারে না। এমনকি সরকারের কোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যদি দ্বিমত পােষণ করা হয় এবং সেই দ্বিমত পােষণকারীর কণ্ঠকে রােধ করার চেষ্টা করা হয়, সেক্ষেত্রে তা গণতন্ত্রের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক গুপ্ত আরও জানান, কোনও রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে ৫১ শতাংশ ভােট পেয়েছে মানে এই নয় যে অপর একটি রাজনৈতিক দল যারা ৪৯ শতাংশ ভােট পেয়েছে তারা ৫ বছর কোনও কথা বলতে পারবে না, এমনটা অযৌক্তিক।
তার কথায়, গণতন্ত্রে প্রত্যেক নাগরিকের ভূমিকা প্রাসঙ্গিক, সরকার সবসময় ঠিক হবে এমনটা নয়। পাশাপাশি সরকারের বিরােধিতা যারা করছেন তাদের প্রসঙ্গে মােদি সরকার যে মনােভাব পােষণ করছে, তার বিরােধিতাও করেন তিনি।
দীপক গুপ্ত জানান, বর্তমানে দেশে কেউ যদি দ্বিমত পােষণ করে সেক্ষেত্রে তাকে দেশদ্রোহী হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকার এবং দেশ দুটি আলাদা বিষয় বলে স্পষ্ট মন্তব্য করেন তিনি। এমনকি যতদিন পর্যন্ত না নিয়মগুলিকে প্রশ্ন করা হয়, ততদিন সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলেও জানান সুপ্রিম কোর্টের এই বিচারপতি। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, গান্ধি, মাকর্স, মহম্মদ সকলেই পুরানাে চিন্তাভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
প্রসঙ্গত, দীপক গুপ্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় বিচারপতি, যিনি এই মাসে দ্বিমত পােষণ করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় দ্বিমত পােষণের মনােভাবকে গণতন্ত্রের ‘সেফটি ভালব’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।