চারবারের খেতাব জয়ী ভারতীয় দল রবিবার ফাইনালে ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে হারিয়ে দিয়ে প্রথমবার অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের খেতাব নিজেদের হাতে তুলে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা। গােটা বাংলাদেশ এখন খুশির জোয়ারে মেতে উঠেছে।
পঞ্চমবার খেতাব জয় করতে নেমে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার সুবাদে বাংলাদেশ দল প্রথমবার খেতাব জয়ের সামনে। ভারতকে ১৭৭ রানে, গুটিয়ে দেওয়ার পর ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বােলার বিষণই বােলিংয়ের সামনে পড়ে কিছুটা নড়বড়ে দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ দলকে। কিন্তু, এমনের সাতচল্লিশ এবং অধিনায়ক আকবর আলির অপরাজিত বিয়াল্লিশ রানের উপর ভর করে বাংলাদেশ দল জয়ের দোড়গােড়ায় প্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু বরুণদেব এসে খেলায় বাধা দিয়ে দেন। তবে, খেলা আর পুনরায় অনুষ্ঠিত করা যাবে না। সেকথা জানিয়ে দেন আম্পায়ররা এবং বাংলাদেশের গ্যালারিতে খুশির আবহ ছড়িয়ে পড়ে। চারবারের চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের খেতাব তুলে নিল নিজেদের হাতে বাংলাদেশ দল ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে।
রবিবার অনুধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসরে ফাইনাল খেলায় চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় দল ফেভারিট হিসাবে মাঠে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রথমবার ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশ দল যে ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং ভারতকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে সেটা অনেকেই বলাবলি করছিলেন।
ফাইনাল খেলায় সবসময় একটা কঠিন লড়াই লক্ষ্য করা যায়, সেখানে যে দলের ক্রিকেটাররা ভালো পারফরমেন্স করে দেখাবে মাঠে নেমে তারাই জয় তুলে নেবে এরকম মন্তব্যও করেছিলেন অনেক ক্রীড়াবিশেষজ্ঞরা।
ফর্মে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের এদিন কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশের অধিনায়ক। কারণ সেমিফাইনালে যারা পাকিস্তানের মতন দলকে দশ উইকেটে হারিয়েছে সেখানে তাদের ফাইনালের মতন আসরে প্রথম ব্যাটিং করতে পাঠানাে এটা একটা অতিরিক্ত সাহস দেখিয়েছেন সেটা সকলেই মনে করছিলেন। কিন্তু, হালে কি হবে বাংলাদেশের বােলাররা যে অন্য পরকননা তৈরি করে রেখেছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের জন্য সেটা কি আর কেউ জানত।
ফর্মে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা প্রথমে ব্যাট করার সুযােগ পেয়ে বাংলাদেশের সামনে বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখবে সেটা অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেগুরে বালি। বাংলাদেশি বােলারদের আক্রমণে মাত্র নয় রানের মধ্যে এক উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। কিন্তু যশস্বী জয়সওয়াল নিজের খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। দ্বিতীয় উইকেটে তিলক বর্মাকে নিয়ে অর্ধশতাধিক রানের পার্টনারশিপ যােগ করে দিয়ে দলকে একশাে রানের গন্ডি পার করিয়ে দেন। কিন্তু, কে জানত তারপর ভারতীয় শিবিরে ব্যাটিং ধস নামবে।
একটা সময় ভারতের রান ছিল এক উইকেটে ১০৩ সেখান থেকে ফর্মে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা পুরােপুরি ব্যাকফুটে চলে যাবে সেটা কেউই জানত না। এরপর ইনিংসে চুয়াত্তর রান যােগ হয় এবং নয় উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারতীয় দল। যদি না যশস্বী জয়সওয়াল ৮৮ রান না করতেন তা হলে হয়তাে ভারতের ইনিংস দেড়শাের আগেই ঘুচিয়ে যেত।
কিন্তু ভারতীয় দলের মিডল অর্ডার যে এভাবে ভেঙে পড়বে সেটা কেউই ভাবতে পারেনি। কোনােরকমে ফাইনাল খেলায় ভারতীয় দল ১৭৭ রান তােলে। তবে ফর্মে থাকা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের আটকে দিয়ে এবং দুশাে রানের বেশি তুলতে না দিয়ে বাংলাদেশি বােলাররা অসাধারণ পারফরমেন্স করে দেখিয়ে প্রশংসাপত্র পাওয়ার যােগ্য সেটা নিশ্চিতভাবে বলাই যায়।