সোনা পাচারের পর কন্নড় ছায়াছবির নায়িকা রান্যা রাওকে নিয়ে আবার প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, এই অভিনেত্রীর একটি সংস্থাকে বিজেপি সরকার এক সময়ে বিশাল পরিমাণ জমি শিল্পের জন্য অনুমোদন করেছিল। সেখানে কারখানা খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অভিনেত্রী। কথা দিয়েছিলেন, ১৩৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবেন। যদিও সেখানে আজ পর্যন্ত কোনও কিছু গড়ে ওঠেনি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন ওই অভিনেত্রীকে এবং তাঁর ভাইয়ের নামে গড়ে তোলা ওই সংস্থাটিকে বিপুল পরিমাণ জমি তুলে দেওয়া হয়েছিল ? সেই নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলেও।
সোনা পাচারের মামলায় ধৃত কন্নড় অভিনেত্রী রান্যা রাওয়ের সংস্থাকে শিল্পের জন্য জমি বরাদ্দ করেছিল কর্নাটক সরকার। ২০২৩ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ‘ক্ষিরোদা প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে এক সংস্থাকে ১২ একর জমি দিয়েছিল। এই সংস্থার অধিকর্তা রান্যা রাও এবং তাঁর ভাই ঋষভ। কর্নাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন নিগম-এর দেওয়া ওই জমিতে ১৩৮ কোটি টাকা খরচ করে ইস্পাত কারখানা তৈরির প্রতিশ্রুতি দেয় অভিনেত্রীর সংস্থা।
কর্নাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন নিগমের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক রবিবার জানান, ওই সংস্থার সঙ্গে যোগ রয়েছে সোনা পাচার মামলায় ধৃত অভিনেত্রীর। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ১২ একর জমি বরাদ্দ করা হয় ওই সংস্থার জন্য। ওই কারখানা তৈরি হলে বহু কর্মসংস্থান হওয়ার কথা বলে জানান কর্নাটক শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন নিগমের আধিকারিক। যদিও সংস্থাকে জমি হস্তান্তর করা হয়ে গিয়েছে কি না তা স্পষ্ট করেনি কর্নাটক সরকার।
এদিকে অভিনেত্রী রান্যা রাওকে জমি দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের রাজনৈতিক চর্চা। কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের অভিযোগ, বিজেপির আমলেই রান্যা রাও-এর প্রতিপত্তি বাড়ে ।
রাজ্যের বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পমন্ত্রী এমবি পাটিলের দপ্তর একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ‘ক্ষিরোদা প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে সংস্থাটিকে সরকার ১২ একর জমি দান করে। তুমাকুরু জেলার সিরসা শিল্পাঞ্চলে এই জমি দেওয়া হয়েছিল। এই সংস্থার মালিক ছিলেন রান্যা ও তাঁর ভাই। আর কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে মে মাসে বিধানসভা নির্বাচনের পর। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই জমিতে টিএমটি বার, রড ও অন্যান্য সামগ্রী উৎপাদনের জন্য কারখানার গড়ার প্রস্তাব ছিল। ওই প্রকল্পে ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
এদিকে কংগ্রেসের কটাক্ষের পাল্টা বিজেপির তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
গত ৩ মার্চ দুবাই থেকে ফেরার পথে বেঙ্গালুরুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১২ কোটি টাকার সোনা-সহ গ্রেপ্তার হন রান্যা। তিনি কর্নাটকের এক আইপিএস অফিসারের মেয়ে। রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের তদন্তকারীদের অনুমান, এই সোনা পাচারচক্রে রান্যা একা জড়িত নন, এর পিছনে রয়েছে বড়সড় চক্র। এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।