জামিনের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সিবিআইয়ের মামলার কারণে তাঁকে জেলেই দিন কাটাতে হচ্ছে। ওই মামলায় জামিন চেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার জামিনের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পার্থর আইনজীবী। তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, সুপ্রিম কোর্ট থেকে ইডির মামলায় জামিন পেলেও সিবিআইয়ের মামলার কারণে এখনও তাঁকে জেলে থাকতে হচ্ছে। শুক্রবার এই বিষয়ে সিবিআইকে নোটিস জারি করে আদালত। কেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এতদিন ধরে জেলে রয়েছেন তা জানাতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। আগামী ২০ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
একের পর এক আবেদনে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এখনও জেলেই রয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একাধিক মামলায় জড়িয়ে পড়ায় জামিন মেলা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার নতুন করে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। শুক্রবার ছিল সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং এন কে সিংয়ের এজলাসে। ইডির মামলায় জামিন পাওয়া গিয়েছে। তাহলে কেন সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় জামিন পাওয়া যাবে না সেই প্রশ্ন তুলে জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। এরপরেই আদালতের পক্ষ থেকে নোটিস জারি করা হয়।
প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের মামলা থেকে জামিন চেয়ে গত বছর কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ ৯ জন জামিনের আবেদন করেছিলেন। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল এই মামলা। গত ২০ নভেম্বর মামলার রায় দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু চারজনের জামিনের পক্ষে দুই বিচারপতি রায় দিলেও পার্থ-সহ অন্য পাঁচ জনের জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে একমত হতে পারেনি ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে জামিন দিলেও বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোককুমার সাহার জামিন দেননি।
ডিভিশন বেঞ্চ একমত না হওয়ায় এরপর মামলাটি বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর একক বেঞ্চে পাঠান কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে এই মামলার শুনানির পর তিনিও তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। এরপরই জামিন পেতে পার্থ চট্টোপাধ্যার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। গত বছরের ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এর মধ্যে পার্থকে জামিন দিতে হবে। তার আগে সব গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ কার্যকর হলেও জেলেই থাকতে হচ্ছে পার্থকে।
২০২২ সালের ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন। শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি, আর্থিক লেনদেনের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ে। বাড়িতে দীর্ঘ তল্লাশি চালায় ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর বক্তব্যে অসঙ্গতি মেলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডি।