• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

সিএএ বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হর্ষ মন্দার, জহর সরকাররা

সিএএ এবং এনপিআরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এবার এককাট্টা হলেন প্রাক্তন আইএএস অফিসাররা।

হর্ষ মন্দার (Photo : IANS)

সিএএ এবং এনপিআরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এবার এককাট্টা হলেন প্রাক্তন আইএএস অফিসাররা। বৃহস্পতিবার মােট ১০৬ প্রাক্তন এই সমস্ত আমলা দেশবাসীর কাছে কেন্দ্রের এই নতুন সংশােধিত আইনের বিরুদ্ধে সােচ্চার হতে আহ্বান করেছেন। এই মর্মে একটি খােলা চিঠি লেখা হয়েছে জনগণের উদ্দেশে।

সমস্ত প্রাক্তন আমলার দাবি, সংশােধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিল করতে হবে। কোনওভাবেই সিএএ এবং এনপিআর কার্যকর করা যাবে না। সরকারের দমনপীড়ন নীতির বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়ানাের পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন বাতিল করার দাবিতে সােচ্চার হয়েছেন প্রাক্তন আমলারা।

বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবে প্রসার ভারতীর প্রাক্তন কর্তা জহর সরকার এই কথা জানিয়েছেন। ১০৬ প্রাক্তন আইএএসের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যনির্বাচন কমিশনার, ভিন রাজ্যগুলির একাধিক মুখ্যসচিব এবং একাধিক রাজ্যের একাধিক সচিব।

প্রাক্তন আইএএস অফিসার হর্ষ মন্দার জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্য সরকার নতুন সংশােধিত নাগরিকত্ব আইন মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সােচ্চার হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ একাধিক মন্ত্রী দাবি করছেন, সমস্ত রাজ্যে এই আইন কার্যকরী হবে।

হর্ষ মন্দারের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে আইন কার্যকর করতে চাইলে সেক্ষেত্রে দেশে একটা সংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে। প্রয়ােজন মনে করলে কেন্দ্র রাষ্ট্রপতি শাসন, এমনকি সরকার ভেঙে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারে। তিনি অবশ্য মনে করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কোনও অবস্থাতেই নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে দেশের মানুষকে এর বিরুদ্ধে জোরালাে প্রতিবাদ করতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন আইএএস অফিসার হর্ষ মন্দার অনুরােধ করেন, তিনি যেন কেরল বিধানসভার মতাে বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে সিএএ এবং এনপিআরের বিরুদ্ধে বিরােধিতা করে প্রস্তাব গ্রহণ করেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে জনগণের মতামত শুনতে হবে। ভয় দেখালেও জোরালাে প্রতিবাদ জানাতে হবে। তবে আন্দোলনকারীরা যদি সামান্য হিংসার আশ্রয় নেয়, সেক্ষেত্রে কেন্দ্র কুড়িগুণ হিংসা চালাবে আন্দোলনকারীদের উপর।

প্রাক্তন আইএএস জহর সরকার মনে করেন, রাজ্য সরকার সিএএ না মানলে রাষ্ট্রপতি শাসন করার মতাে সাহস হবে না। এনআরসির নাম করে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এটাকে কোনওভাবেই মেনে নেব না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম না করে তিনি অভিযােগ করেন, যে দেশের মানুষকে সামান্য রেশন কার্ড জোগাড় করতে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে, সেখানে তাঁরা ফরেন ট্রাইব্যুনালের কথা বলছেন। তিনি মনে করেন, কেন্দ্রের এই সরকার আর হয়ত বেশি দিন স্থায়ী হবে না। কিন্তু যে ক্যান্সারের মতাে মারণাত্মক রােগ রেখে দিয়ে যাবে, সেখানে পরবর্তী সরকারকে কেমােথেরাপি করতে কালঘাম ছুটবে।

অধ্যাপক রতন খাসনবিস ক্ষোভের সঙ্গে জানান, রাজ্য সরকার এই আইনের পক্ষে অতিরিক্ত তেরটি ভােট পড়েছে। এই তেরটি ভােট কি করে অতিরিক্ত সরকারের পক্ষে পড়ল, সেটা ভালাে করে পর্যালােচনা করে দরকার। তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, রাজ্যসভায় তেরজনের মতাে তৃণমূলের সদস্য, সত্যিই তারা সরকারের পক্ষে ভােট দিয়েছিলেন কিনা, সেটা দেখা প্রয়ােজন।

এদিকে ফোরাম ফর ডেমেক্রেসি অ্যান্ড কমিউন্যাল অ্যামিটির তরফে শুক্রবার কলকাতায় নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে প্রতিবাদ মিছিল করবে। ফোরাম ফর ডেমােক্রেসি অ্যান্ড কমিউন্যাল অ্যামিটির পক্ষে আব্দুল আজিজ, নাদিম খান, মওলানা আব্দুর রফিক দাবি করেন, রাজ্য সরকারকে অবিলম্বে রাজ্য বিধানসভায় সিএএ এবং এনপিআর-বিরােধী প্রস্তাব পাস করতে হবে।