বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছে দেশ, এই সময়ে যেকোনও প্রচেষ্টা শান্তির জন্য হওয়া উচিত, এমনটাই মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বােবড়ে । সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনকে ‘সাংবিধানিক’ ঘােষণা করার আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন এক বক্তি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে এ জাতীয় আবেদনগুলি কোনও উপকারে আসে না’।
সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে যে দেশজুড়ে যে বর্তমান এই আইনের বিরােধিতায় সে সহিংসতা চলছে তা বন্ধ হওয়ার পরেই সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে করা কোনও আবেদনের শুনানি শুরু করবে, তার আগে নয়। নাগরিকত্ব আইনের বৈধতা নিয়ে করা মামলার আবেদনকারী তথা আইনজীবী বিনীতি ধনদা বলেন, সুপ্রিম কোর্টকে অবশ্যই সিএএ’কে ‘সাংবিধানিক’ ঘােষণা করতে হবে এবং যে সব সমাজকর্মী, পড়ুয়া এবং সংবাদমাধ্যমগুলি মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘আমরা এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ঘােষণা করতে পারি যে সংসদে পাশ করা আইনটি সাংবিধানিক? সবসময়েই সাংবিদানকতা একটা অনুমেয় বিষয়। আপনি নিজে একজন আইনের ছাত্র, অতএব আপনার তাে এই বিষয়টি জানা উচিত’, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া।
‘আদালতের কাজ হল একটি আইনের বৈধতা যাচাই করা এবং সেটি সাংবিধানিক কিনা তা ঘােষণা করা নয়’, বলেন সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের অন্তর্ভুক্ত অন্য দুই বিচারপতি বি আর গাওয়াই এবং সূর্যকান্ত।
‘দেশ এখন সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখন শান্তি রাখার জন্য চেষ্টা করা উচিত। আর এই ধরনের আবেদনগুলি সে বিষয়ে মােটেই সাহায্য করবে না’, কঠিন স্বরে বলেন প্রধান বিচারপতি বােবড়ে। সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনটি সংবিধানের চেতনাবিরােধী নয় এবং আইনটিকে কোনওভাবেই ভারতের কোনও নাগরিকের বিরুদ্ধে যাবে না, এই বিষয়টি যাতে কেন্দ্র স্পষ্ট করে জানায় সে বিষয়ে আদালতকে নির্দেশ দেওয়ার কথাও বলেন আবেদনকারী।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সারা দেশে বিক্ষোভ চলছে। বিশেষত কলেজ ক্যাম্পাসে এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে এই প্রথমবার নাগরিকত্ব আইনে ধর্মকে নাগরিক হওয়ার মাপকাঠি করা হয়েছে। সরকারের দাবি, এই আইনের ফলে, ২০১৫-এর আগে, ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে চলে আসা তিন মুসলিম অধ্যুষিত দেশের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ সহজ হবে। কিন্তু সমালােচকদের দাবি, এই আইনটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে। বিভাজনমূলক এবং তা সংবিধানের ধর্মনিরপক্ষেতাকে লঙঘন করে।