অবশেষে কুম্ভমেলা ছাড়লেন অ্যাপেল কর্তা স্টিভ জোবসের স্ত্রী লরেন্স পাওয়েল জোবস। তিনি কুম্ভমেলায় ১০ দিনের জন্য আসলেও মাত্র তিন দিনের মাথায় বেরিয়ে গেলেন। জানা গিয়েছে, এখানে এসে ত্বকে এলার্জির সমস্যার কারণে তিনি মেলা প্রাঙ্গণ ছাড়তে বাধ্য হলেন। বুধবার মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে লরেন্স পাওয়েল ভুটানের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আপাতত সেখানে তিনি কিছুদিন থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
গত ১৩ জানুয়ারি মহাকুম্ভ মেলায় অংশগ্রহণ করতে আসেন অ্যাপেলের সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং ধনকুবের স্টিভ জোবসের স্ত্রী লরেন্স পাওয়েল। তিনি এখানে নিরঞ্জন আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী কৈলাশানন্দ গিরির শিবিরে আশ্রয় নেয়। তিনি মকর সংক্রান্তিতে স্নান করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থ থাকার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। বুধবার সকালে তাঁর গুরু আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী কৈলাশানন্দ গিরির কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করেন। লরেন্স পাওয়েলকে মহাকালী বীজ মন্ত্র দেওয়া হয়। এরপর তিনি “ওম কৃম মহাকালিকা নমহ” মন্ত্র উচ্চারণ করেন।
নিরঞ্জন আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী কৈলাশানন্দ গিরি বলেন যে, আধ্যাত্মিক অনুসন্ধানের জন্য লরেন্সকে মহাকুম্ভে নিয়ে এসেছে। আর সনাতন ধর্মের মধ্যেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে। তিনি সেই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন এবং আত্মতৃপ্তি লাভ করেছেন। তিনি ‘কমলা’ নামে একটি নতুন নাম ধারণ করেছেন।
নিরঞ্জন আখড়ার সন্ন্যাসী আরও বলেন, লরেন্স খুবই সাধারণ, ভদ্র এবং তাঁর আধ্যাত্মিক অনুসন্ধান তাঁকে এখানে নিয়ে এসেছে। তিনি বিশ্বের ধনী এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের একজন হওয়া সত্ত্বেও তাঁর ভিতরে অহংকার এবং কোনও দেখনদারি ব্যাপার নেই। তাঁর আচার-ব্যবহারেই সেই পরিচয় পাওয়া যায়। সন্ন্যাসী আরও বলেন,’তিনি এখানে এসেছেন আমাদের চিরন্তন এবং কালজয়ী সনাতন সংস্কৃতি ও সমস্ত চেতনার উৎসস্থল দেখতে। তিনি প্রথমবার কুম্ভে এসেছেন। এখানকার সনাতনী অভিভাবক, ঋষি এবং সাধুদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। মহাকুম্ভে আসার আগে লরেন্স পাওয়েল বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির পরিদর্শন করেছেন।’
প্রসঙ্গত সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অ্যাপেলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জোবস ১৯৭৪ সালে একটি চিঠিতে ভারত ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি কুম্ভমেলা পরিদর্শন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি। এখন মনে করা হচ্ছে, স্টিভ জোবসের সেই ইচ্ছাকে পূরণ করতে লরেন্স ভারতে এসেছেন। এদিকে ১৯৭৪ সালে স্টিভ জোবসের লেখা সেই চিঠি ৪.৩২ কোটি তাকে বিক্রি হয়েছিল।