• facebook
  • twitter
Wednesday, 15 January, 2025

এবার স্যালাইনের অভাবে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ রায়গঞ্জ হাসপাতালে

এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রায়গঞ্জ মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায়। তিনি দাবি করেন, ওই রোগীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ফলে চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি।

স্যালাইনের অভাবে রোগীমৃত্যুর জেরে শোকগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।

একদিকে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে নিষিদ্ধ স্যালাইন বাজেয়াপ্ত করার তোড়জোড় যখন চলছে, ঠিক তখনই স্যালাইনের অভাবে রোগী মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে রাজ্যকে। নিষিদ্ধ স্যালাইন বাজেয়াপ্ত করার সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প স্যালাইনের ব্যবস্থা না করাটা চূড়ান্ত গাফিলতির পরিচয় বলে মনে করছেন অনেকে। খুবই দুঃখজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃতের নাম হিরণ্ময় মোহান্ত।

এদিকে হিরণ্ময় মোহান্তর মৃত্যুর খবরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে। রোগীর আত্মীয়রা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তদন্তের আশ্বাসে দিলে বিক্ষোভ উঠে যায়।

সোমবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ স্যালাইনের অভাবে মৃত্যু হয় ৫২ বছর বয়সী হিরণ্ময় মোহান্তর। তাঁর বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ শহরের শান্তি কলোনিতে। রবিবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসার চূড়ান্ত গাফিলতির জেরে তাঁর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

জানা গিয়েছে, তাঁকে ভর্তির পর স্যালাইন চ্যানেলের ব্যবস্থা করা হলেও তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়নি। এমনকি রাতে তাঁকে সিসিইউতে রেফার করা হলেও সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাঁর ঠিকঠাক চিকিৎসা করা হয়নি। সেটা করা হলে তিনি বেঁচে যেতেন।

যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রায়গঞ্জ মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায়। তিনি দাবি করেন, ওই রোগীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। ফলে চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। তিনি আরও দাবি করেন, ‘সমস্ত ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য দপ্তর স্বীকৃত স্যালাইন মজুত রয়েছে। পরিবারের অভিযোগ ঠিক নয়। স্যালাইন, ওষুধ সবই দেওয়া হয়েছিল। সিসিইউ-তে জায়গা না থাকায় সময় মতো পাঠানো যায়নি। তবে অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু হয়েছে।’

রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগে হাসপাতালের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অব্যবস্থার অভিযোগ ওঠে। হুইল চেয়ারের অভাবে এখানকার জরুরি বিভাগে অসুস্থ স্বামীকে পিঠে করে দোতলার বহির্বিভাগে নিয়ে যান একজন মহিলা। চুয়ান্ন বছরের অসুস্থ ওই রোগীর নাম পরিতোষ বর্মন। তিনি রায়গঞ্জের রায়পুরের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী সলিতা বর্মন অভিযোগ করেন, ‘ঘরের চাল ভেঙে পড়ে আমার স্বামীর দু’পায়ে চোট লাগে। হাসপাতালে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও হুইলচেয়ার পাইনি। তখন ওঁকে পিঠে করে দোতলায় নিয়ে গিয়েছি। খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু কিছু করার ছিল না।’

এব্যাপারে হাসপাতালের সুপার দাবি করেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত হুইলচেয়ার রয়েছে। কেন উনি হুইলচেয়ার পেলেন না, তা বুঝতে পারছি না। এরপরই বিধায়ক কৃষ্ণকল্যাণী মেডিক্যালে পর্যাপ্ত হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেন।