গ্রামীণ এলাকার মানুষদের পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে আগেই সজলধারা প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য। এই প্রকল্পের আওতায় উপকৃত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এবার বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার টার্গেট পূরণ করতে মরিয়া রাজ্য। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সেই কাজ শেষ করতে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাজে গতি আনতেই বিশেষ অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
৪ জানুয়ারি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের এক বৈঠকে এই অ্যাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জেলাগুলিকে এই অ্যাপ নিয়ে অবগত করা হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে নদিয়া জেলা থেকে এই নতুন অ্যাপের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হবে। সূত্রের খবর, নদিয়া জেলার করিমপুর ব্লকের মাধ্যমে পথচলা শুরু করবে এই অ্যাপ। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গোটা ব্যবস্থা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করিমপুর ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৭টি গ্রামের মোট ৪৬ হাজার ৭৫৩টি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত বাড়িতেই জলের লাইন পৌঁছে গিয়েছে। সেই কারণেই এই ব্লকেই অ্যাপ চালুর পরিকল্পনা করেছে দপ্তর। অ্যাপটি মানুষের সমস্যার সমাধানের জন্য কার্যকরী হলে ধাপে ধাপে গোটা রাজ্যেই তা চালু করা হবে।
অ্যাপ তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। তবে এই অ্যাপের নাম কী হবে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে অ্যাপটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে। যে কোন ব্যক্তি বিনামূল্যে এই অ্যাপ মোবাইলে ডাউনলোড করতে পারবেন। এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে কিছু জানাতে গেলে সংশ্লিষ্ট নাগরিকের আধার এবং ফোন নম্বর যাচাই করা হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।
করিমপুর ব্লকে এই অ্যাপ চালুর আগে প্রথমে ট্রায়াল রান করা হবে। সেটি শেষ হলেই এই ব্লকে অ্যাপ চালু হয়ে যাবে। এই অ্যাপ চালু হলে সমস্যা জানানোর জন্য বাসিন্দাদের আর ছোটাছুটি করতে হবে না। বাড়িতে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে পানীয় জল সংক্রান্ত নিজেদের অভিযোগের কথা জানাতে পারবেন। এই প্রক্রিয়াটি দ্রুত ও কার্যকরী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী পুলক রায় জানিয়েছেন, এমন একটি ব্লক থেকে পরিষেবার সূচনা করা হবে যেখানে ১০০ শতাংশ বাড়িতে পানীয় জল সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে, অ্যাপটি সফল হলে তা গোটা রাজ্য জুড়ে চালু করা হবে, যা বাংলার গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের পরিস্থিতি উন্নত করতে সহায়ক হবে। আপাতত করিমপুরের সমস্ত বাড়িতে জলের লাইন পৌঁছেছে। তাই সেখান থেকেই পথচলা শুরু করতে পারে এই অ্যাপ।