ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম এবং রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল। শুক্রবার এই ঘোষণা করেছে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, বৈঠকে আলোচনার প্রেক্ষিতে আরাবুল এবং শান্তনুর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করেছে দল। সাসপেন্ডের পর আরাবুল এ প্রসঙ্গে কিছুই বলতে চাননি। অন্যদিকে, শান্তনু সেনের বক্তব্য, তিনি বুঝতেই পারছেন না যে তাঁর কোন কাজটি দলবিরোধী হল।
যদিও শান্তনুর ভাষায়, ‘দলীয় নেতৃত্বের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে।’ তবে ঠিক কী কারণে আরাবুল এবং শান্তনুকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেসের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির একটি বৈঠক ছিল শুক্রবার। সেই বৈঠকে ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদারও। বৈঠক। শেষে তিনি ভিডিও বার্তায় দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
উল্লেখ্য, গত বছর আগস্টে আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছিলেন শান্তনু। এরপরই দলের সঙ্গে খানিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। তৃণমূলের মুখপাত্র পদ থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
অন্যদিকে, অপরাধের মামলায় জামিন পাওয়ার পরেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে কোণঠাসা ছিলেন আরাবুল। গত ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দলের আর এক গোষ্ঠীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে- ছিলেন আরাবুল। একদা শিক্ষিকাকে জলের পাত্র ছুঁড়ে মারার অভিযোগে অভিযুক্ত আরাবুলের গাড়িতে সেদিন পাথর ছোঁড়েন তৃণমূলেরই কর্মীরা।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভাঙড়ের তৃণমূল পর্যবেক্ষক তথা ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা আরাবুলকেই দায়ী করেন। তিনি জানান, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ নিয়ে অভিযোগ জানাবেন। উল্লেখ্য, গতবছরের শেষের দিকে তৃণমূলের কর্মসমিতির বৈঠকেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন, দলবিরোধী কাজ, মন্তব্য বা যে কথা ও কাজের জন্য দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়- সেটি একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখাই লক্ষ্য। সেই উদ্দেশ্যে নতুন করে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিও তৈরি করে দিয়েছিলেন দলনেত্রী।