• facebook
  • twitter
Wednesday, 8 January, 2025

যুদ্ধ জিগির ইউনূসের সেনা মহড়া পুরোদমে

উল্লেখ করা যায়, বেশ কয়েকমাস ধরে ভারত বিদ্বেষী তোপ দেগে চলেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সেখানকার কট্টরপন্থী নেতা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনকর্তারাও একের পর এক হুমকি, হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ধারে ও ভারে কোনও তুলনাই আসে না। সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশকে দশ গোল দেবে ভারত। তা সত্বেও ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জিগির বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের নানান উপদেষ্টার। রবিবার রাজবাড়ী জেলায় হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের বিগ্রেড গ্রুপের যুদ্ধের মহড়া। আকাশে উড়েছে যুদ্ধবিমান। সাঁজোয়া গাড়ি নামিয়ে রীতিমত মহড়া দিয়েছে সেনাবাহিনী। গ্রেনেড নিক্ষেপ করে কীভাবে শত্রুপক্ষকে নিকেশ করা যায়. সেই প্রশিক্ষণও চলেছে বেশ কিছুক্ষণ। গোলাবর্ষণ, আর্টিলারি মর্টার ব্যবহার করা হয়েছে পুরোদমে। স্মোক স্ক্রিন তৈরি করে চুপিসাড়ে শত্রুপক্ষের একেবারে কাছে কীভাবে পৌঁছে যায়, সেই অনুশীলনও বাংলাদেশি সেনাবাহিনী সেরে রেখেছে। এই সেনা প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ইউনূস। এই মহড়ায় এসেছিলেন দেশের তিন বাহিনীর প্রধানও। তাঁদের সঙ্গেও বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা করেছেন তিনি।

এর পরেই ইউনূসের এই মহড়া নিয়ে মন্তব্য সামনে এসেছে। সেখানে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কী কারণে এই মহড়া হয়েছে। ইউনূসকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘যদিও এটা বাস্তব নয়, এটা মহড়া মাত্র। এই মহড়া থেকেই বাস্তবের সৃষ্টি, প্রস্তুতি। যাতে প্রকৃত যুদ্ধে আমরা সফলভাবে বিজয়ী হয়ে আসতে পারি। সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্যই হল বিজয়ী হওয়া। সমস্ত পরিস্থিতিতে দেশকে রক্ষা করা। যে কোনও মুহূর্তে যে
যে-অবস্থায় থাকুন না কেন, প্রয়োজনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। পূর্ণ প্রস্তুতি ও সাহস নিয়ে।’

এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়, বেশ কয়েকমাস ধরে ভারত বিদ্বেষী তোপ দেগে চলেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সেখানকার কট্টরপন্থী নেতা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনকর্তারাও একের পর এক হুমকি, হুঁশিয়ারি দিয়ে চলেছেন। মাস খানেক আগে ঢাকার অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বলেছিলেন, ৪ দিনের মধ্যে তাঁরা কলকাতা দখল করে নেবেন। এর পর আরও একধাপ এগিয়ে বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখল করার ডাক দিয়েছিলেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভি। এমনকী দিল্লি দখলের ডাক দেওয়া হয়েছিলো কট্টরপন্থীদের তরফ থেকে। এই পরিস্থিতিতে ইউনূসের যুদ্ধের মহড়ায় বিস্মিত কূটনীতিকরা। তাঁরা বলছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে অফিসার-জওয়ান সহ সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা ১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার। সেখানে বাংলাদেশের মাত্র ১ লক্ষ ৬৩ হাজার। ভারতের কাছে মোট ২ হাজার ২৯৬টি এয়ারক্রাফট আছে। সেখানে বাংলাদেশের ২১৬টি। ভারত পরমাণুশক্তিধর দেশ, বাংলাদেশ এখনও সেই ক্ষমতা অর্জন করে উঠতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধগিজির তোলা কতটা যুক্তিযুক্ত?

এখানে আর একটা প্রশ্ন উঠে আসছে, তাহলে এই মহড়ার পেছনে বুদ্ধি যোগাচ্ছে অন্য কোনও দেশ. তারাই কি যুদ্ধ জিগির তুলতে তাতাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারকে। বাংলাদেশের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার। সফরের আগে বাংলাদেশকে ‘হারিয়ে যাওয়া ভাই’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এও জানা যাচ্ছে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশে পা রাখার পর, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একসঙ্গে সেনা মহড়া দেবে। তাহলে কি ‘নতুন বন্ধু’ পাকিস্তানের ভরসাতেই যুদ্ধ জিগির জেগে উঠেছে বাংলাদেশে?