• facebook
  • twitter
Thursday, 19 December, 2024

আরজি কর কাণ্ডে নতুন করে তদন্ত চেয়ে মামলা দায়ের করলেন নির্যাতিতার বাবা-মা

পরিবারের যদি সেই তদন্ত নিয়ে কোনও আপত্তি থাকে, সে ব্যাপারে হাইকোর্ট নজরদারি করবে। তাতে কোনও বাধা নেই'। অর্থাৎ নির্যাতিতার পরিবারের মামলাটি গ্রহণ করেন বিচারপতি।

আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফাইল চিত্র

আরজিকর কান্ডে তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের। সিবিআই তদন্তে অনাস্থা জানিয়ে নতুন করে মেয়ের খুনের তদন্ত চেয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন আরজি করের নির্যাতিতার বাবা-মা। ইতিমধ্যে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

কিন্তু পূর্বের তদন্তের অগ্রগতি কতদূর? সে ব্যাপারে সিবিআই-এর কাছে রিপোর্ট তলব করলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছে,’আগামী ২৪ ডিসেম্বর সিবিআই-কে তদন্তের যাবতীয় নথি হাইকোর্টে পেশ করতে হবে’। তবে কোনওভাবেই ট্রায়াল বন্ধ করা যাবে না বলেও এদিন স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। চলতি বছরের গত ৮ অগস্ট গভীর রাতে আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে।

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে নির্যাতিতার পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের মেয়ের নৃশংস খুনের ঘটনায় তদন্তের বহু দিক রয়েছে। কিন্তু সব দিকে তদন্তকারীরা নজর দিচ্ছেন না। সে কারণেই নতুন তদন্তের দাবিতেই মামলা দায়ের করতে চাইছেন। সওয়ালপর্বে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘সুপ্রিমকোর্ট এই তদন্তে নজরদারি করছে। তবে পরিবারের যদি সেই তদন্ত নিয়ে কোনও আপত্তি থাকে, সে ব্যাপারে হাইকোর্ট নজরদারি করবে। তাতে কোনও বাধা নেই’। অর্থাৎ নির্যাতিতার পরিবারের মামলাটি গ্রহণ করেন বিচারপতি।

একই সঙ্গে বিচারপতি ঘোষ জানিয়ে দেন,’আরজি কর মামলার তদন্ত কীভাবে এগোচ্ছে, তা নিয়ে আগামী ২৪ ডিসেম্বর আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে সিবিআই-কে। একই সঙ্গে ১৫ দিন পর পর তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট নেওয়া যায় কিনা? এ ব্যাপারেও ওই দিনের শুনানিতে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে’।

সিবিআই-এর তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে তদন্তে অগ্রগতির ব্যাপারে ৮টি স্ট্যাটাস রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে আদালতকে। আরজি করের ডাক্তারি ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণ মামলায় গত শুক্রবারই জামিন পেয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে জামিন পেয়েছেন টালা থানার প্রাক্তন আইসি অভিজিৎ মণ্ডলও। ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। তাই জামিন দেওয়া হয়েছে বলে জানায় আদালত।

এই ঘটনায় কার্যত হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তারপর থেকেই চিকিৎসক সংগঠন থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ ফের আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল নির্যাতিতার পরিবার। সিবিআই তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা বর্তমান তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে সিবিআই-এর উপর অবিশ্বাসের কথাও জানান। তাই নতুন করে তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

মামলার শুনানির সময় বিচারপতি বলেন,’সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের অগ্রগতি দেখছে। আমি দেখব ভিক্টিমের বাবা-মা যা বলছেন, সেটা নিয়ে তদন্তের অগ্রগতি কী! চার্জশিট জমা দেওয়ার পর তদন্ত কী হয়েছে? আরও কাউকে তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন কিনা সেটা জানাবে সিবিআই’। ২৪ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি। সিবিআই জানায়,’আমাদের অগ্রগতি জমা দিতে সমস্যা নেই।’ এব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে আগামী ১৭ মার্চ ফের শুনানি।