• facebook
  • twitter
Wednesday, 18 December, 2024

উত্তরাখণ্ডের অনুর্বর জমিতে পতঞ্জলি মডেল

পাউরি গাড়োয়ালের অনুর্বর জমিগুলিকে উর্বর জমিতে রূপান্তরিত করা, স্থানীয় কৃষকদের উপকৃত করা এবং একইসঙ্গে অভিবাসন রোধ করার লক্ষ্যে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর বক্তব্যে প্রকাশ করলেন আচার্য বালকৃষ্ণ।

ফাইল চিত্র

উত্তরাখণ্ডের অনুর্বর জমিগুলিকে উর্বর জমিতে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে দিশা দেখাচ্ছে পতঞ্জলির মডেল। জানালেন পতঞ্জলি যোগপীঠের আচার্য বালকৃষ্ণ। জমির উর্বরতা বাড়াতে একটি উন্নত কৃষির রূপরেখা তুলে ধরেছেন তিনি। উত্তরাখণ্ড রাজ্যে সামাজিক ও পরিবেশগত নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় নানা পরামর্শ দিয়েছেন আচার্য বালকৃষ্ণ।

পাউরি গাড়োয়ালের অনুর্বর জমিগুলিকে উর্বর জমিতে রূপান্তরিত করা, স্থানীয় কৃষকদের উপকৃত করা এবং একইসঙ্গে অভিবাসন রোধ করার লক্ষ্যে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর বক্তব্যে প্রকাশ করলেন আচার্য বালকৃষ্ণ। তিনি বলেন, ‘যাঁরা কিছুই করেন না, তাঁদের সব বিষয়েই অভিযোগ থাকে। যাঁরা সামাজিক কাজে যুক্ত হতে চান না, তাঁরা, যাঁরা কাজ করেন তাঁদের মধ্যে ভুল-ত্রুটি খুঁজে পান।’ তিনি সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সমাজের সমস্যাগুলির সমাধানে সক্রিয় হতে হবে। আর তা যদি করা সম্ভব না হয় তবে স্বীকার করে নিতে হবে যে, আমরাই সেই সমস্যার কারণ।’ তিনি কারও সমালোচনার বদলে সমস্যার সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।

এক্ষেত্রে পতঞ্জলি যোগপীঠের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছেন আচার্য বালকৃষ্ণ। পোখরার গ্রামে অনুর্বর জমি চিহ্নিত করে তার উন্নয়নের জন্য পতঞ্জলি যোগপীঠের যে ভূমিকা, তার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করি সেখানকার বেশিরভাগ জমিই অনুর্বর। আমরা সেখানকার বাড়ি বা বাসিন্দাদের জীবনে কোনও রকম বিঘ্ন না ঘটিয়ে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হই। আমরা অব্যবহৃত জমি কেনার জন্য আলোচনা শুরু করি। কিন্তু, শীঘ্রই আমরা বুঝতে পারি যে সেখানে জল নেই। সেক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি?’

উত্তরাখণ্ডের এইসব অঞ্চলের ইতিহাসের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন যে, এই অঞ্চল একসময় চন্দন কাঠের জঙ্গল হিসেবে পরিচিত ছিল। চন্দন কাঠের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এখানকার সুগন্ধি উৎপাদন বিস্তৃত ছিল গঙ্গা থেকে কনৌজ পর্যন্ত। কিন্তু এখন উত্তরাখণ্ডে চন্দন গাছের অভাব। তাঁর কথায়, ‘আগে যদি এখানে উর্বর জমিতে গাছ জন্মে থাকে, তবে আবার এই জমিকে চাষযোগ্য করে তোলাও সম্ভব। তাই আমরা এখানে বহু প্রচেষ্টার পর জলের ব্যবস্থা করতে পেরেছি এবং বর্তমানে এই অঞ্চলটিকে কৃষকদের জন্য একটি মডেলে পরিণত করছি।’

তাঁদের এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার সুফল মিলেছে। ফের উত্তরখণ্ডের এই অঞ্চলের মাটিতে মাথা তুলেছে চন্দন গাছ, নিম, মাল্টা। শুরু হয়েছে ফসলের চাষ।

আচার্য বালকৃষ্ণের মতে, ‘এই প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য হল সেইসব কৃষকদের সহায়তা করা, যাঁদের ফসল ফোলানো সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা সেচের জন্য সম্পদের অভাব রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘যদি এটি সফল হয়, তাহলে এখানকার অনুর্বর জমি উর্বর করা সম্ভব। সম্ভব স্থানীয় মানুষের জীবিকা নির্বাহ করা এবং সর্বোপরি অভিবাসন রোধ করা।’