• facebook
  • twitter
Thursday, 16 January, 2025

আবার দিল্লি ক্রিকেটের মসনদে জেটলি পুত্র রোহন, কীর্তির ব্যাটে জয় এল না

১৯৮৩ সালে কপিল দেবের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য বলেছিলেন, ‘রোহন আমার ছেলের মতো। আমি চেয়েছিলাম ওর সঙ্গে খোলাখুলি একটা বিতর্কসভা করতে। কিন্তু ওরা কেউ এল না। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সদস্যেরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে তা বোঝা যাবে। পরিবর্তন আসবেই।’

ফাইল চিত্র

আবারও দিল্লি ক্রিকেটের মসনদে বসলেন অরুণ জেটলির পুত্র রোহন জেটলি। রোহনের নামে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনের আগে। এমনকি তদন্ত করা হোক বলে দাবি তুলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ ও প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। কীর্তি বাংলা থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। বর্ধমানের দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে। ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন কীর্তি আজাদ। তবে, দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে রোহনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ব্যাট করতে পারলেন না। ভোটে হেরে গেলেন।

দিল্লি ক্রিকেট সংস্থায় মোট ভোট ২৪১৩। সভাপতি হতে প্রয়োজন ১২০৭ ভোট। রোহন পেয়েছেন ১৫৭৭ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী কীর্তি আজাদ পেয়েছেন ৭৭৭ ভোট। শুধু রোহন একা নন, তাঁর শিবিরের প্রত্যেকেই জিতেছেন। ১২৪৬ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিকে খান্নার কন্যা শিখা কুমার। তিনি হারিয়েছেন রাকেশ কুমার বনশল (৫৩৬) ও সুধীর কুমার আগরওয়ালকে (৪৯৮)। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সচিব হয়েছেন অশোক শর্মা। তিনি পেয়েছেন ৮৯৩ ভোট। ১৩২৮ ভোট পেয়ে কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন হরিশ সিংহ। যুগ্মসচিব হয়েছেন অমিত গ্রোভার। তিনি পেয়েছেন ১১৮৯ ভোট। সাত জন ডিরেক্টর নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই রোহন শিবিরের। তাঁরা হলেন, আনন্দ বর্মা (৯৮৫ ভোট), মনজিৎ সিংহ (১০৫০ ভোট), নবদীপ (১০৩৪ ভোট), শ্যাম শর্মা (১১৬৫ ভোট), তুষার সায়গল (৯২৬ ভোট), বিকাশ কাতিয়াল (১০৫৪ ভোট) ও বিক্রম কোহলি (৯৩৯ ভোট)।

১৪ বছর ধরে দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি ছিলেন অরুণ জেটলি। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। অরুণ জেটলি প্রয়াত হওয়ার পরে ক্রিকেট প্রশাসনে আসেন পুত্র রোহন। চার বছর আগে প্রথম বার তিনি দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি হন। তার পরেই দিল্লির ‘ফিরোজ শাহ কোটলা’ স্টেডিয়ামের নাম বদলে নিজের বাবা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নামে ‘অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম’ রাখেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই গত বছর দিল্লির স্টেডিয়ামে এক দিনের বিশ্বকাপের ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল।

রোহন সভাপতি হওয়ার পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন কীর্তি আজাদ। রোহনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনার পরেই বিজেপি বহিষ্কার করে আজাদকে। তারপরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২৪ সালে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে হারিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন ।

নির্বাচনের আগে রোহনকে একটি বিতর্কসভায় আহ্বান করেছিলেন আজাদ। রোহন যাননি। আজাদ দাবি করেছিলেন, কিছু বলার নেই বলেই আসেননি তিনি। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য বলেছিলেন, ‘রোহন আমার ছেলের মতো। আমি চেয়েছিলাম ওর সঙ্গে খোলাখুলি একটা বিতর্কসভা করতে। কিন্তু ওরা কেউ এল না। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সদস্যেরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে তা বোঝা যাবে। পরিবর্তন আসবেই।’

কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। হারতে হয়েছে কীর্তি আজাদ শিবিরকে। দ্বিতীয় বারের জন্য দিল্লি ক্রিকেটের মসনদে বসেছেন রোহন। ভোটের মধ্যে দিয়ে বোঝা গেল দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে রোহনই একমাত্র প্রতিনিধি। ক্রিকেটার সাংসদ কীর্তি আজাদ দুর্নীতির কথা বলেও কোনও লাভ করতে পারেননি। বড় ব্যবধানে হেরে গেছেন কীর্তি আজাদ।