বুধবার দিঘায় নির্মীয়মাণ জগন্নাথ ধাম পরিদর্শন করে উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস। মমতা তাঁকে জগন্নাথ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এরপরই রাধারমণের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একটি সাক্ষাৎকারে এবার তারই জবাব দিলেন রাধারমণ।
শুভেন্দুর অভিযোগ, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে দিঘায় মন্দির বানিয়ে চার ধামের একটি ধাম পুরীকে অপমান করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে রাধারমণ দাস কোনও প্রতিবাদ করেননি। শুভেন্দু এদিন মমতাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ”একজন জগন্নাথদেবের ভক্ত হিসেবে পরিষ্কার বলতে চাই, চার ধামের এক ধাম পুরী ধাম। পুরী ধামকে নকল করবেন না।” পাশাপাশি রাধারমণ দাসকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ”পুরী ধামকে অপমানিত করা হয়েছে। তাঁর সাক্ষী রইলেন রাধারমণ। পশ্চিমবঙ্গে সবই সম্ভব।” রাধারমণকে নিয়ে শুভেন্দু আরও বলেন, ”আমার লজ্জা লেগেছে রাধারমণ দাসজিকে দেখে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে কোনও আপত্তি করলেন না। অথচ ইসকন কলকাতার একজন কার্যকর্তা হিসেবে তাঁর উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর বয়ানের আপত্তি জানানো।”
এ প্রসঙ্গে রাধারমণ দাস বলেন, ”দিঘা আর পুরীর মন্দির এক, একথা আমরাও কেউ বলছি না। ফলে এ নিয়ে বিতর্কের প্রশ্নই নেই। জগন্নাথ মানে জগতের নাথ। তাঁর মন্দির সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।” তিনি আরও বলেন, ”আমরা ভগবানের সেবক। আমাদের যেখানে ভগবানের সেবা করার জন্য ডাকা হবে আমরা সেখানেই যাব।” যদিও বিরোধী দলনেতা রাজনীতি করছেন কি না তা নিয়ে বিতর্কে জড়াতে চাননি রাধারমণবাবু। তাঁর কথায়, ”আমি আধ্যাত্মিক মানুষ, এ নিয়ে মন্তব্য করব না।”
উল্লেখ্য, আগামী বছরের অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় উদ্বোধন হবে জগন্নাথ মন্দির। ৩ দিনের দিঘা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘোষণা করেছেন। মন্দিরের জন্য মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে রাখা হয়েছে কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাসকেও। এরপর থেকে মন্দির নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর দাবি, মন্দিরটি সরকারি টাকায় তৈরি হচ্ছে। যা আইন বিরুদ্ধ। কাগজপত্রে কোথাও মন্দির নির্মাণের কথা উল্লেখই নেই। শুভেন্দুর দাবি, রামমন্দির দেখে মমতার হিংসা হয়েছে। তাই দিঘায় জগন্নাথ ধাম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন মমতা।