দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে অভিষেক হওয়ার আগেই চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত ট্রাম্পের। শাসনব্যবস্থায় অনেক বদল আনার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। দেশে বেআইনি অনুপ্রবেশ থেকে শুরু করে ভিসা ব্যবস্থা, এমনকি নাগরিকত্ব আইনেও বদল আনতে চান। তাঁর পরিকল্পনায় রয়েছে, এবার থেকে আমেরিকাতে জন্মগ্রহণ করলেই কোনও ব্যক্তি সেদেশের নাগরিকত্ব পাবেন না। সেজন্য জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইনের বদল আনার চেষ্টা করবেন ট্রাম্প। তিনি দেশের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত পুরনো আইনকে হাস্যকর ও ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন।
সম্প্রতি ট্রাম্প একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। বলেন,’ক্ষমতায় আসার পর আমার প্রথম কাজ হবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইনে বদল আনা। কারণ, এই আইন অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং বার্থ টুরিজমকে উৎসাহিত করে।’ অর্থাৎ ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, সন্তান জন্ম দিতে অন্য কোনও দেশে যাওয়া এবং সেখানে সদ্যোজাতের জন্য দ্বিতীয় নাগরিকত্ব ও সুযোগ সুবিধা নেওয়ার প্রবণতাকে বোঝায়। যদিও এই আইনটির বদল আনা ট্রাম্পের পক্ষে খুব সহজ হবে না। সেকথা তিনি নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন। কারণ জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই বিধানটি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সম্মত এবং আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টও বিষয়টিকে সমর্থন করে।
প্রসঙ্গত আমেরিকার সংবিধান অনুযায়ী, সেদেশে যদি কোনও শিশু জন্মগ্রহণ করে, তাহলে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে সম্মান দেওয়া হয়। তবে সেই সূত্র ধরে ওই সদ্যোজাতের বাবা-মা নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী নন। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই আইনটির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প। ২০২০-তে পরাজিত হলেও ফের বিপুল জনসমর্থন পেয়ে দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে চলেছেন ট্রাম্প। একযোগে সেনেট, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও হোয়াইট হাউসের ক্ষমতাদখল করছে রিপাবলিকান শিবির। এমনকি আমেরিকার সবকটি ‘সুইং স্টেট’ও গিয়েছে ট্রাম্পের ঝুলিতে। ঐতহাসিক’ এই জয়কে সর্বকালের সেরা রাজনৈতিক আন্দোলন বলেও আখ্যা দিয়েছেন রিপাবলিকান নেতা। জয়ের পরই আমেরিকায় ‘স্বর্ণযুগ’ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। ‘আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করবেন।
এদিকে ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এক কোটিরও বেশি বেআইনি অণুপ্রবেশকারী রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে এই বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছেন। তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের পর বেআইনি অনুপ্রবেশকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে কড়া হাতে দমন করবেন বলে আগাম ঘোষণা করে দিয়েছেন। যদিও এব্যাপারে মানবিক বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হবু প্রেসিডেন্ট। তাঁর কথায়, যেসমস্ত ব্যক্তিরা খুব ছোটবেলায় অন্য দেশ থেকে আমেরিকায় এসেছিলেন, অথচ তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এখন তাঁরা মধ্যবয়স্ক কিংবা প্রবীণ, সরকার তাঁদের পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।