• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অসম ও ত্রিপুরায় নামল সেনা

নাগরিকত্ব (সংশােধনী) বিল নিয়ে রাজ্যসভায় টানা কয়েক ঘন্টা ধরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠার পর রাতের দিকে বিলটি পাশ হয়ে যায়।

অগ্নিগর্ভ গুয়াহাটি (Photo by Biju BORO / AFP)

নাগরিকত্ব (সংশােধনী) বিল নিয়ে রাজ্যসভায় টানা কয়েক ঘন্টা ধরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠার পর রাতের দিকে বিলটি পাশ হয়ে যায়। খসড়া বিলটি উচ্চকক্ষে পেশ হওয়ার পর থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলােতেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়। আঞ্চলিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার লক্ষ্যে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর ও মনু এলাকায় দু কলম বাহিনী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় কলমকে অসমের বনগাইগাঁওতে প্রস্তুত রেখে দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমন আনন্দ বলেন, ‘দু কলম বাহিনী ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর ও মনু এলাকায় পাঠানাে হয়েছে। তৃতীয় কলম বাহিনী অসমের বনগাইগাঁও থেকে এক কিলােমিটার দূরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এক কলমে ৭০ জন সেনানি থাকে। একজন বা দু’জন অফিসার কলমকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে’। আনন্দ বলেন, ফিল্ড কম্যান্ডার ও সেনা হেডকোয়ার্টার পরিস্থিতির ওপর নজরদারি চালাচ্ছে। এদিকে, জেলা প্রশাসনের অনুরােধে অসমের ডিব্রুগড়ে পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম পাঠানাে হয়েছে। ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, ‘সেনাবাহিনীকে ডেকে পাঠানাে হয়নি। পাশাপাশি কার্ফু জারি করার মতাে পরিস্থিতি তৈরি হয়নি’।

নাগরিকত্ব (সংশােধনী) বিল নিয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলােতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলার পাশাপাশি সংঘর্যেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। ফলে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে ৫০০০ আধাসামরিক বাহিনী পাঠানাে হয়েছে। পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ভারতে ঢুকে পড়া অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সংস্থান রাখা হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রীস্টান জনজাতি ভারতে নিশ্চিত আশ্রয়ের কারণে বিভিন্ন সময়ে ভারতে এসে বসবাস শুরু করেছেন।

দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি তাঁর শাসনকালে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সােমবার মধ্য রাতের কিছুটা আগে লােকসভায় নাগরিকত্ব (সংশােধনী) বিলটি পাশ হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ সাল পর্যন্ত অ-মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত (হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রীস্টান), যারা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে নিশ্চিত আশ্রয়ের লক্ষ্যে এসে বসবাস শুরু করেছেন, তাদের বেআইনি অভিবাসী হিসেবে গণ্য করা হবে না, ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করেন। পাশাপাশি তিনি উত্তর-পূর্বের সমস্ত পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি প্রতিবাদকারীদের শান্ত থাকার আবেদন করেন। অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরামের উপজাতি এলাকা ও ইনার লাইন পারমিট সিস্টেমের আওতাভুক্ত এলাকাগুলিকে নাগরিক (সংশােধনী) বিলের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। যদিও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। আগরতলায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠার পর ত্রিপুরা প্রশাসনের তরফে রাজ্যের সর্বত্র আগামি দুদিনের জন্য মােবাইলে ইন্টারনেট পরিষেবা ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের ডাকে গুয়াহাটিতে বনধ পালন করা হচ্ছে।