• facebook
  • twitter
Thursday, 19 December, 2024

‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতৃত্বে মমতাকে চান লালুপ্রসাদও, বামেদের অবস্থান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

মমতাকে নেত্রী করা হলে 'ইন্ডিয়া' জোটে আদৌ মহম্মদ সেলিম, বৃন্দা কারাটরা থাকবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

লালুপ্রসাদ যাদব ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ইন্টারনেট।

এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ব্যাটন ধরলেন আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব। শরদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদব, কিরণময় নন্দ, উদ্ধব ঠাকরে, জগনমোহন রেড্ডি প্রমুখ নেতাদের পর এবার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতৃত্বে মমতার নাম প্রস্তাব করে সরব হলেন লালু। সম্প্রতি ওয়াইএসআর কংগ্রেস সাংসদ ভি বিজয়সাই রেড্ডিও মমতাকে ‘ইন্ডিয়ার মুখ’ করার দাবি তুলেছিলেন। এবার লালুর মতো বর্ষীয়ান নেতা মমতার হয়ে সওয়াল করলেন। পাশাপাশি এদিন কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করেন তিনি। মমতাকে বিরোধী জোটের নেত্রী করা হলে বামেদের কী অবস্থান হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

লালু বলেন, ‘কংগ্রেসের কোনও আপত্তি মানব না, ধোপে টিকবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে নেতৃত্ব দিক। সেটাই উচিত।’ এর আগে এক্স হ্যান্ডেলে ভি বিজয়সাই রেড্ডি লিখেছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আদর্শ প্রার্থী। তাঁর রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অভিজ্ঞতা রয়েছে।’

উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর ইন্ডিয়া জোটের মুখ হিসেবে কংগ্রেসের গুরুত্ব ক্রমশ ফিকে হয়ে আসছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাঁদের নেতৃত্বদানের ক্ষমতা নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক দলগুলির নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। আরজি কর আবহেও রাজ্যের ৬টি বিধানসভার উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। এর আগে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনেও রাজ্যে সবুজ ঝড়ের কারণে ইন্ডিয়া জোটের মুখ হিসেবে মমতার নাম সামনে আসছে।

কয়েকদিন আগেই মমতা জানিয়েছিলেন, কলকাতায় বসেই তিনি ইন্ডিয়া জোট পরিচালনা করতে প্রস্তুত। সময় যত এগোচ্ছে তত বিরোধীরা মমতার হয়ে ব্যাটন ধরছেন। বিরোধীদের একাংশের দাবি, ইন্ডিয়া জোটে একক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে কংগ্রেস। অনেক ক্ষেত্রে দাদাগিরি করে সব কিছু নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে। এই কারণে আঞ্চলিক দলগুলির কৃতিত্ব খর্ব হচ্ছে। এদিন কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে লালুপ্রসাদ যাদব বলেন, ‘কংগ্রেসের আপত্তি ধোপেই টিকবে না, আমরা সবাই মমতাকে ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী হিসেবে চাইছি।’ লালুর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আগেই আমরা বলেছিলাম, কংগ্রেস বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নেতৃত্বের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়, তাহলেই ভালো।’

মমতাকে নেত্রী করা হলে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে আদৌ মহম্মদ সেলিম, বৃন্দা কারাটরা থাকবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এবিষয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘এটা দিল্লির বিষয়, দিল্লির নেতারা বলবেন। আমি এখান থেকে কী বলব! বাংলায় তো ইন্ডিয়া জোট নেই।’ অপরদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী মমতাকে কটাক্ষ বলেন, ‘এই বিষয়টা ইন্ডিয়া ব্লকে কি আলোচনা হয়েছে? যাঁর কথা বলছেন তিনি ইন্ডিয়া জোটে থাকুক আর না থাকুক কিছু যায় আসে কি? কারণ, উনি জোটে থাকুন না থাকুন কোনও লাভ নেই। উনি নামে আছেন, কিন্তু বাস্তবে থাকেন না।’