শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন ‘কালীঘাটের কাকু’। কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডির মামলায় জামিন মঞ্জুর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতের কাছে একটি নম্বর জমা রাখতে হবে এবং আদালতের নির্দেশ ছাড়া নম্বর বদল করা যাবে না, এই নির্দেশ দিয়ে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারপতি।
শুক্রবার বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ তিনটি শর্তে জামিন দিয়েছেন। বলা হয়েছে- ১) মামলার সঙ্গে যুক্ত কোনও তথ্য ও প্রমাণ নষ্ট করা যাবে না। ২) সাক্ষীদের প্রভাবিত করা যাবে না। ৩) পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যেতে পারবেন না ‘কাকু’। নিম্ন আদালতে এলাকার বাইরেও যেতে পারবেন না তিনি। বছর দেড়েক আগে নিয়োগ মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চেয়ে বিচারভবনে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
প্রসঙ্গত ‘কালীঘাটের কাকু’কে ‘শোন অ্যারেস্ট’ ( গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে পুনরায় গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া ) দেখতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিল সিবিআই। এখনও তা করা যায়নি। ইডি-র মামলা থেকে জামিন পাওয়ার পর এবার সুজয়কৃষ্ণের জেলমুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নভেম্বর তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সুজয়ের বিরুদ্ধে চারটি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি অসুস্থতার কারণে। আদালতে জামিন পেয়ে যাওয়ায় সেই প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদিও শুক্রবার নিম্ন আদালতে আবার ‘কাকু’কে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ জারি থাকলে আপাতত জেল থেকে বেরতে পারবেন না তিনি।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ২০২৩ সালের ৩০ মে সুজয় ভদ্রকে গ্রেপ্তার করে ইডি। গ্রেপ্তারির পর দীর্ঘদিন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ‘কাকু’। এমনকী জেল হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর হার্ট অপারেশনও হয়। অসুস্থতার যুক্তি দেখিয়ে একাধিকবার আদালতে জামিনের আর্জি জানিয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। “কালীঘাটের কাকু”-কে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল সিবিআই। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজিরা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। এদিন ইডির মামলায় জামিন পেলেন তিনি। এবার দেখার, সিবিআই তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি পায় কিনা।