মঙ্গলবারই ঠিক হয়ে গিয়েছিল, শুধু বাকি ছিল আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই ঘোষণা করা হল। মহারাষ্ট্রের রাশ থাকছে দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের হাতেই। বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন ফড়ণবিস। শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১১ দিন পর মহারাষ্ট্রের মহানাটকের অবসান হল। মুম্বইয়ে বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকের পর দেবেন্দ্রর নামেই সিলমোহর দেওয়া হল।
গত কয়েকদিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে কার্যত দড়ি টানাটানি চলছিল মহারাষ্ট্রে। একনাথ শিণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী পদ পেতে এতটাই অনড় ছিলেন যে, বিজেপি নেতৃত্বের শিণ্ডেকে সামলাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছিল। গেরুয়া শিবির আগেই মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করে রেখেছিল। প্রয়োজন ছিল শুধু শিণ্ডের সম্মতি। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর একনাথ শিণ্ডে নিজের বাসভবনে ফিরতেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। সূত্রের খবর, সেখানেই শিণ্ডেকে বুঝিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য রাজি করিয়ে নেন ফড়ণবিস।
বুধবার মুম্বইয়ে ছিল বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক— কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণি। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ফড়ণবিসের নাম প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবে সায় দেন সকলেই। পাশাপাশি পরিষদীয় দলের নেতা হিসাবেও ফড়ণবিসের নাম বাছাই চূড়ান্ত হয় বুধবারের বৈঠকেই।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ফড়ণবিসের সঙ্গেই শপথ নেবেন অজিত পওয়ার এবং একনাথ শিণ্ডে। প্রথমজন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। পরের দুজন উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। শোনা যাচ্ছে, মন্ত্রিসভার বণ্টন নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। নয়া ফর্মুলা অনুযায়ী, বিজেপির হাতে থাকবে ২২টি মন্ত্রক। ১২টি মন্ত্রক এবং বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান পদ পাবে শিণ্ডে সেনা। অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি অর্থমন্ত্রীও হবেন।
ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের আজ়াদ ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ফড়ণবিসের নাম ঘোষণা হতেই নাগপুরের বাড়ির সামনে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জমায়েত হতে শুরু করেন। রীতিমত বাজনা বাজিয়ে নাচগান শুরু হয়ে যায়। নাগপুর থেকে অসংখ্য বিজেপি কর্মী মুম্বই রওনা হতে শুরু করেছেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে।
এদিন বিকেলেই ফডণবীসের নেতৃত্বাধীন বিজেপি বিধায়কদের একটি দল রাজভবন যান। রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানান তাঁরা।
উল্লেখ্য এবার রাজ্যে ১৪৯টি আসনে লড়াই করে ১৩২টি আসনে জিতেছে বিজেপি। যা রাজ্যের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এছাড়াও বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবসেনা ৫৭টি এবং অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি ৪১টি আসনে জয়ী হয়েছে। ফলে বিজেপির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমানে টক্কর দিয়েছে এনডিএ-র শরিক দলগুলিও। ফলে তাঁদেরকে ঠিকমতো গুরুত্ব দেওয়াটা এখন বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।