দেশে জঙ্গি কার্যকলাপ রোধ করতে আরও কঠোর অবস্থান নিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এক্ষেত্রে একটি জাতীয় নীতি ও কৌশল নিতে চলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই তাঁর মন্ত্রকের তরফে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন। সরকারি সূত্রের খবর, সংসদের চলতি অধিবেশনে অভিন্ন নীতি ও কৌশল সংক্রান্ত এই প্রস্তাব পেশ করা হতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর, জঙ্গি সংগঠনগুলির কার্যকলাপ রোধে দেশের সব রাজ্য অভিন্ন অবস্থান নেবে। কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সংগঠনকে যদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, তবে সেই আদেশ সারা দেশে বলবৎ হবে। একইভাবে রাজ্য সরকারগুলি কোনও সংগঠনকে যদি দেশবিরোধী বলে ঘোষণা করে, সেক্ষেত্রে অন্য রাজ্যও সেই সংগঠনের কার্যকলাপ রোধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই জাতীয় নীতিতে জঙ্গি দমনে প্রতিটি রাজ্যে বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন বাহিনী গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি রাজ্যে জঙ্গি দমনে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী থাকলেও শাহের মন্ত্রক দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আধুনিক হাতিয়ার ব্যবহার ও সরবরাহের কোথাও উল্লেখ করেছে। এজন্য রাজ্যের বাহিনীকে জাতীয় স্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হবে যাতে সব রাজ্যেই সমান দক্ষতা সম্পন্ন বাহিনী গড়ে উঠতে পারে।এখন অন্যান্য বাহিনীর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে থাকে জঙ্গি দমন পুলিশ। তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা শাখা নেই।এ কইভাবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে অভিজ্ঞ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়েও আলাদা ইউনিট গড়ে তোলার প্রস্তাব রয়েছে জাতীয় নীতির খসড়ায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও বিরোধী দলের সাংসদদের একাংশের আশঙ্কা, এই নীতির ফলে রাজ্যের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারের বিষয়। যদিও এর আগেই ইউপিএ সরকার জঙ্গি কার্যকলাপকে আইন-শৃঙ্খলার আর পাঁচটা ঘটনার থেকে আলাদা করে বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এতে ক্ষুব্ধ রাজ্যগুলি। বিশেষ করে এনআইএ রাজ্যের তদন্তের বিষয়গুলিতে হস্তক্ষেপ করায় অনেক রাজ্য সরকারই বিরক্ত।
খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জঙ্গি দমনের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই নতুন বাহিনীর জন্য প্রতিটি ব্যাটেলিয়নে মৌলবাদ, জঙ্গি নাশকতা, সন্ত্রাসবাদীদের বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা নেটওয়ার্ক নিয়ে বিশেষ পঠনপাঠনের ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি বাহিনীর থাকবে নিজস্ব গোয়েন্দা শাখা । এছাড়াএ থাকবে প্রিজন, ফিন্যান্সিয়াল এবং আইটি সেল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষজ্ঞদের মতে, জঙ্গি নাশকতার ছক কষার একটি বড় জায়গা কারাগার। সেখানেও দলে নতুন নিয়োগের প্রাথমিক কাজ করে থাকে জঙ্গি সংগঠনগুলি। ফলে কারাগারের দিকে বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন।