আদানি-ইস্যু থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জনস্বার্থ রক্ষার্থে পরিচালিত হওয়া, বুধবার দিল্লিতে দলের সংসদীয় বৈঠকে ফের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে প্রায় সময়ই বলতে শোনা গিয়েছে, ‘সংসদ গণতন্ত্রের মন্দির, জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্যেই প্রত্যেক সাংসদ নিজ পদে শপথগ্রহণ করেন। তাই জনস্বার্থের বিষয়ে আওয়াজ তুলে দিল্লি থেকে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিতে হবে।’
এই মূলমন্ত্রই ফের প্রতিধ্বনিত হলো অভিষেক-কণ্ঠে। প্রসঙ্গত, ঘুষ-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে আদানির নাম। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই শাসক শিবির ‘এনডিএ’-কে বিঁধতে প্রস্তুত বিরোধী শিবির ‘ইন্ডিয়া’। তৃণমূল কংগ্রেস এই ‘ইন্ডিয়া’-র তৃতীয় বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের অবস্থান পৃথক। আদানি-ইস্যুকে কেন্দ্র করে শীতকালীন অধিবেশনের প্রথমদিনই উত্তাল সংসদ। তবে চলতি লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশনে এই বিষয়টিতে অধিক গুরুত্ব দিতে নারাজ বাংলার শাসকদল, বদলে জোর দিতে হবে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা, মূল্যবৃদ্ধি, রেল সমস্যা-সহ জনস্বার্থের বিষয় গুলিতে। এদিন দলীয় সাংসদদের নিয়ে সংসদে তৃণমূলের দলীয় অফিসে বৈঠকে বসেন সাংসদ অভিষেক। সেখানেই তিনি জানান, আগের অধিবেশনের মতোই এবারও বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সুর চড়াতে হবে দলকে। এর পাশাপাশি বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, মণিপুরের পরিস্থিতি, সারের দাম বৃদ্ধি, সারের সরবরাহ কম- এই সকল জনস্বার্থের বিষয়গুলি নিয়ে আওয়াজ তোলা হবে সংসদের অধিবেশনে। কেন্দ্রকে প্রশ্নবাণে বিঁধে দেওয়ার উপদেশও দিয়েছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ে এনডিএ সরকারের অবস্থান দাবি করা হবে তৃণমূলের তরফে, এমনটাই সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাসভবনে আয়োজিত তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে দলনেত্রী নিজেই ঠিক করে দিয়েছিলেন সংসদে কোন কোন বিষয়ে আলোকপাত করবেন দলীয় সাংসদরা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধি, সার, বেকারত্ব, মনিপুর, আবাস ও একশো দিনে বাংলায় বরাদ্দ বন্ধ- এই সকল প্রসঙ্গ লোকসভায় তুলবেন আমাদের সাংসদরা।’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এবং উপদেশ পালনে বদ্ধপরিকর দল। তাই বুধে দলের সংসদীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী-বাণীই স্মরণ করালেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।