শুরুতেই টক্কর চলছিল সেয়ানে সেয়ানে। সাপ লুডোর মতো কখনও এগিয়ে যাচ্ছিল বিজেপি জোট, আবার কখনও বা ইন্ডিয়া জোট। কিন্তু বেলা যত বাড়তে থাকে, ততই ছবিটা পরিষ্কার হতে থাকে। ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট হয়ে যায় ফের ঝাড়খণ্ডের মসনদে ফিরতে চলেছেন হেমন্ত সোরেনই। মোট ৮১টি আসনের মধ্যে জেএমএম জোট তথা ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ৫৭টি আসন। বিজেপি জোট পেয়েছে ২৩টি আসন আর অন্যান্যদের ঝুলিতে গেছে ১টি আসন।
অন্যদিকে আরবসাগরের পাড়ে বিজেপি দুরন্ত ফল করলেও এখানে দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য ছবি। অথচ নির্বাচনী প্রচারে কোনও খামতি রাখেননি বিজেপি নেতারা। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ, দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্রের মতো ইস্যুতে তারা সরব হয়েছে বারে বারে। তবু হল না শেষরক্ষা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে যে ফ্যাক্টরটা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে, সেটি হল সহানুভূতি। এবছরের ৩১ জানুয়ারি ইডি গ্রেপ্তার করেছিল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে। তাঁকে আর্থিক দুর্নীতিতে জড়ানোর অভিযোগ ছিল। সেটাকেই বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল বিজেপি। আর এখানেই দুরন্ত ‘মাস্টারস্ট্রোক’ খেলে দিয়েছেন হেমন্ত। তাঁর স্ত্রী কল্পনা সোরেন লাগাতার স্বামীর গ্রেপ্তারি নিয়ে বিজেপিকে তোপ দেগেছেন। পাশাপাশি অন্য জেএমএম নেতানেত্রীরাও একইভাবে আক্রমণ চালিয়ে গিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, এই ‘ভিক্টিম কার্ড’ই ‘ট্রাম্প কার্ড’ হয়ে দেখা দিল বিধানসভা নির্বাচনে।
নির্বাচনের জয় নিয়ে হেমন্ত সোরেন বলেছেন,‘আমরা হোমওয়ার্ক করেছিলাম। লড়াই কঠিন ছিল। অনেকটাই গ্রাউন্ড লেভেলে গিয়ে কাজ করেছি। টিমওয়ার্ক ভালো ছিল। মানুষের কাছে আমরা আমাদের বার্তা পৌঁছতে পেরেছি।’
অন্যদিকে অনেকেই মনে করছেন, বিজেপির হারের পিছনে রয়েছে শরিকি দ্বন্দ্ব। এছাড়া এই ‘দলবদলু’দের পক্ষে ভোট দিতে অনীহা ছিল ভোটারদের একটি বড় অংশের। আর একটি ফ্যাক্টর হল গেরুয়া দলের কোনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ছিল না। ফলে সেটাও বিভ্রান্ত করেছে ভোটারদের। আর এখানেই বাজিমাত করেছে ইন্ডিয়া জোট।