ভরসন্ধ্যায় তৃণমূল কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনার দু’দিনও কাটেনি। ফের কলকাতায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম। এবার ভরা বাজারে সোনার দোকানে লুটের চেষ্টা। দোকানদারের হার ছিনতাইয়ের সময় বাধা পেয়ে কোপানো হল তাঁকে। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার মুকুন্দপুর বাজারে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারার দুই দুষ্কৃতীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
মুকুন্দপুর বাজারে অবস্থিত ওই সোনার দোকানটিতে রবিবার সকালে ক্রেতা সেজে আসে দুই দুষ্কৃতী। রবিবারও সকাল থেকেই দোকানে বসেছিলেন বছর ৪৩-এর সঞ্জয়কুমার সরকার। আচমকা তাঁর চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এলাকার বাসিন্দারা। দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় আর্তনাদ করছেন সঞ্জয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সঞ্জয়বাবুকে উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। সঞ্জয়বাবুর অবস্থা স্থিতিশীল হবে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জন দুষ্কৃতী মুকুন্দপুরের সোনার দোকানে ক্রেতা সেজে ঢোকে। এরপর শুরু করে লুটপাঠ। সেই সময় দোকানের মালিক তাদের বাধা দেন। সেই সময় দোকানদারের গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ওই দুষ্কৃতীদের একজন। সঞ্জয়কুমার সরকারের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। একাধিক বার তাঁর গলায় কোপ মারা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মুকুন্দপুর খুবই শান্তিপূর্ণ এলাকায়। আশপাশে বেশ কয়েকটি বড় বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষজনও এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। কোনও দিন এলাকায় এরকম ঘটনা ঘটেনি। সাতসকালে ভরা বাজারে এই ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। রাত ১২টা পর্যন্তও এখানে নিশ্চিন্তে চলা ফেরা করা যায় বলেও দাবি তাঁদের।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, দোকানের মালিকের চিৎকার শুনে ছুটি আসি। ওর গলা রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। গায়ের গেঞ্জি, রুমাল দিয়ে গলা চেপে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমরা মোড়ের মাথায় চা খাচ্ছিলাম। ও তো এলাকার ছেলে দেখি, ওর গলা থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। বাসিন্দারাই দুই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে। দুষ্কৃতীদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এলাকার লোকজনের বক্তব্য, কেউই স্থানীয় নয়।
এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনার দোকানে লুটের ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম – দীপঙ্কর পাল এবং সাগর। দীপঙ্কর পাল মুকুন্দপুর এলাকারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করে। ত্রিপুরার বাসিন্দা দীপঙ্কর কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকত। অন্যদিকে সাগর মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। শেয়ার বাজারে ব্যাপক লোকসানের কারণে দীপঙ্কর সোনার দোকানে লুটপাত চালানোর ছক কষে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।