২০১৪ সালের মার্চ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরে রামকিশোর ভট্টাচার্যের বাড়িতে শুরু হয়েছিল স্থানীয় কবিদের নিয়ে একটি কবিতাপাঠের আসর। সে সময় মৃদুল দাশগুপ্তর বৃহস্পতিবার অফ ডে থাকায় তাঁর নিয়মিত উপস্থিত থাকার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে একমাত্র করোনা মহামারীর সময় বাদ দিয়ে প্রতিমাসের শেষ বৃহস্পতিবার এই আসর নিয়মিতই চলেছে। আসরটির নাম “বেস্পতির আড্ডা”।
পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট কবি, গল্প লেখক, আবৃত্তি শিল্পী, সঙ্গীত শিল্পীরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন ভাষাভাষী কবি ও বিদেশের কবিরাও আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন এই আড্ডায়। গত ৩১ অক্টোবর এই আড্ডার ১০০-তম আসরটি বসেছিল রামকিশোর ভট্টাচার্যের বাড়িতে। গত ৭ নভেম্বর আড্ডাটির আনুষ্ঠানিক শততম পর্বটি হয়ে গেল শ্রীরামপুরে “রায় বাহাদুর” রাজা কিশোরীলাল গোস্বামীর পিতা রঘুরাম গোস্বামী নির্মিত রাজবাড়ির ঠাকুর দালানে।
উঁচু উঁচু থাম, দেওয়ালে পঙ্খের কাজ করা খিলান দেওয়া প্রশস্ত রাজবাড়ির ঠাকুর দালানে আয়োজিত এই আসরে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ৭৫ জন কবি, আবৃত্তি শিল্পী, গল্পলেখক, সঙ্গীতশিল্পী। অনুষ্ঠানে সম্মান জানানো হয় রমা ঘোষ, নমিতা চৌধুরী, মৃদুল দাশগুপ্ত, সুশোভন অধিকারী, শুভেন্দু ব্যানার্জী, রূপক চট্টরাজ ও ইন্দ্রাণী গোস্বামীকে।
কবিদের মধ্যে ছিলেন চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, ইশিতা ভাদুড়ী, তাপস রায়, ঋজুরেখ চক্রবর্তী, অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, চিত্রা লাহিড়ী, অরণ্যা সরকার, ধীমান চক্রবর্তী, অমিত সরকার, শৈলেনকুমার দত্ত, দীপক লাহিড়ী, অরুণাংশু ভট্টাচার্য, সঞ্চারী গোস্বামী প্রমুখ।
অণুগল্প পড়লেন সুশোভন অধিকারী, শতদ্রু মজুমদার সহ আরও অনেকে। দ্বৈত আবৃত্তি করলেন অমিত চক্রবর্তী ও স্বাতী দাস এবং গৌতম দাস ও দেবাশিস ভট্টাচার্য সহ আরও দু’একজন। সূচনাসঙ্গীত পরিবেশন করলেন অধ্যাপিকা ও রবীন্দ্রসঙ্গীত গবেষক ইন্দ্রাণী গোস্বামী। ছিলেন মিত্রা ভট্টাচার্যও।
ইন্দ্রাণী গোস্বামীর এ বছর সঙ্গীত জীবনের ৫০ বছর পূর্ণ হল। অনুষ্ঠানে অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট্ট মেয়ে চর্যা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সপ্তম জন্মদিনের জন্যে উপস্থিত সবাই মিলে শুভেচ্ছা উপহার দিয়েছেন। সোয়া তিন ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানে প্রায় প্রত্যেক অতিথি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন।