আগামী সোমবার থেকে ব্রাজিলে জি-২০ গোষ্ঠীভূক্ত দেশগুলির শীর্ষ নেতাদের যে সম্মেলন শুরু হবে তার আগে বর্তমানে আজারবাইজানের বাকুতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ সংক্রান্ত যে শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে সেখানে জি-২০ দেশগুলির পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে এবিষয়ে এই দেশগুলির অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হলেয় এইসব দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ সংক্রান্ত নীতির প্রয়োগ নিয়ে আরও অগ্রগতির প্রয়োজন আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অনুষ্ঠিত আগেকার সম্মেলনে যে ‘নেট জিরো’ নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল তা পূরণের দিকে অগ্রগতি দেখা গেলেও সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি এখনও আশানুরুপ নয়। বর্তমানে বাকুতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু পরিবর্তন রোধ সংক্রান্ত কপ-২৯ আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনে এই সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত গোষ্ঠীর প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মূলত জি-২০ গোষ্ঠীভূক্ত কোনও কোনও দেশে এবিষয়ে যে কাজ হয়েছে তা নিঃসন্দেহে যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক আবার কিছুক্ষেত্রে অগ্রগতি সেরকম হয়নি।
বিশ্বে উষ্ণায়নের পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিসে ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল সেই নিরিখেই এই প্রতিবেদনে অগ্রগতির হিসেব করা হয়েছে। প্যারিস চুক্তির দশ বছর হতে চলেছে। এর আগে বিগত ২০২২ সালে এবিষয়ে অগ্রগতির পরিমাপের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবের অনুরোধে একটি কর্মীগোষ্ঠী গঠিত হয়। এই প্রতিবেদনটি সেই কর্মীগোষ্ঠীর প্রথম প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদন তৈরিতে এই গোষ্ঠী জি-২০ গোষ্ঠীভূক্ত দেশগুলির প্রায় এক হাজার এই ধরনের নীতি বিশ্লেষণ করেছে।
প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শিরোনাম— নেট জিরো নীতি অনুসারে অগ্রগতির পরিমাপ ও ব্যবসায়িক, আর্থিক ও অন্যান্য বেসরকারি সংস্থায় এই নীতির অনুসরণ। এই নীতিতে মূলত সরকারি ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে বেসরকারি ক্ষেত্র এবিষয়ে কতটা কি করছে তার হিসেব করা। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে জি-২০ দেশগুলিতে অসরকারি ক্ষেত্রে নেট জিরো নীতি গ্রহণের পরিমান তিনগুণ বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে জীবাশ্ম থেকে শক্তি উৎপাদন, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার, জমির পরিমাণ ও বনাঞ্চল ধ্বংস করার বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতা দেখা গেছে এবং এইসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি ভাল হয়েছে। তবে বড় বড় শিল্প সংস্থাগুলিতে এবিষয়ে অগ্রগতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য নয়। জি-২০ গোষ্ঠীভূক্ত দেশগুলির ভেতরে দক্ষিণ আফ্রিকা এবিষয়ে যে অগ্রগতি করেছে তা উদাহরণস্বরূপ। তবে এবিষয়ে নীতি প্রণয়নে ও তা পালনে বৃহৎ শিল্পসংস্থার অংশগ্রহণ প্রয়োজনের তুলনায় কম। তবে ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকোর মত দেশগুলি তাদের পরিবেশ নীতির মধ্যে জমির ব্যবহার, সামাজিক লক্ষ্যমাত্রা, লিঙ্গ সমতাসহ দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সঙ্গে মানানসই বিভিন্ন বিষয়কে অন্তর্ভূক্ত করেছে।