শালিমারের এসি সারাইয়ের মিস্ত্রি শিশু বিক্রি করে কোটিপতি। বিহার থেকে শিশু চুরি করে এনে বাংলায় বিক্রি করা হত। এমনই এক চক্রের হদিস পেল সিআইডি। শালিমার স্টেশনের বাইরে থেকে শিশু পাচার চক্রের পাণ্ডা মানিক হালদার সহ দুজনকে পাকড়াও করে সিআইডি। তাঁদেরকে জেরা করেই সিআইডির হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই শিশু বিক্রির কারবার চলত। বুকিং করার জন্য নগদে অর্ধেক টাকা অগ্রিম হিসাবে দেওয়া হত মানিককে। শিশুদের বিক্রি করা হতো ৩- ১২ লক্ষ টাকা দামে।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিহারে বহু অনুমোদনহীন নার্সিংহোম রয়েছে। সেখান থেকে সদ্যজাতকে কিনে নিয়ে আসা হতো বাংলায়। তারপর সেই সদ্যোজাতকে বাংলা কিংবা দক্ষিণ ভারতের বিক্রি করে দেওয়া হত। আড়াই থেকে তিন ধরে এই চক্র বাংলায় সক্রিয় ছিল। এই কদিনেই তারা ৫০ টার বেশি শিশু বিক্রি করেছে বলে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। বিভিন্ন শিশুর বিভিন্ন দর ছিল। কোন দম্পতি পুত্র সন্তান চাইলে তাকে ১২ লক্ষ টাকা দিতে হতো। প্রথমে অগ্রিম কিস্তি হিসাবে ৬ লক্ষ টাকা নগদে মানিকের হাতে দিতে হত। এরপর মানিক বিহারে তাঁর চক্রের অন্য পাণ্ডাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। তাঁদের সঙ্গে ওই অবৈধ নার্সিংহোমগুলির যোগ থাকতো। সেখান থেকেই শিশু এনে তাঁরা বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ। এরপর শিশু পৌঁছে যেত সংশ্লিষ্ট দম্পতির কাছে। যদিও কন্যা সন্তানের দর খুব বেশি ছিলনা।
রবিবার এই শিশু পাচার চক্রের পান্ডা মানিক ও তাঁর এক মহিলা সঙ্গীকে শালিমার স্টেশনের বাইরে থেকে গ্রেফতার করে সিআইডির তদন্তকারী অফিসারেরা। বুধবার মানিককে সঙ্গে করে সিআইডির একটি দল বিহারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। সিআইডির মূল উদ্দেশ্য সেখানকার সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমগুলিকে চিহ্নিত করা। জানা গিয়েছে, মানিক একসময় এসি সারাইয়ের কাজ করতেন। কিন্তু বর্তমানে মানিকের একাধিক গাড়ি-বাড়ি হদিশ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা।