• facebook
  • twitter
Thursday, 14 November, 2024

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াকু মনোভাব নিয়ে ভারতীয় দল চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পরপর সিরিজ জিতেছে ভারত। ২০১৮-১৯ সালে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি জিতে নেয় ভারত। ২০২০-২১ সালে আজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে ভারতীয় দল দ্বিতীয়বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জেতে।

অস্ট্রেলিয়ার পার্থে অনুশীলনরত ভারতীয় শিবির।

নতুন অঙ্গীকার নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের একটা অংশ অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে গিয়েছে। শুধু পৌঁছে গিয়েছে, তাই নয়, অনুশীলনেও তাঁরা নেমে পড়েছেন। তবে সবাই এখন না পৌঁছলেও ওই দলে যশস্বী জয়সওয়াল ও ঋষভ পন্থরা রয়েছেন। আসলে নিউজিল্যান্ডের কাছে দেশের মাটিতে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে যাওয়ার পরে ভারতীয় দলকে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। সেই সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া সফরে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবার জন্য রোহিত ব্রিগেডরা তৈরি হয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় দল দুরন্ত ফর্ম ফিরে পাবে।

পাশাপাশি, নিজেদের ফিটনেসটাকে ধরে রাখতে চাইছেন ক্রিকেটাররা। যশস্বীদের অনুশীলনে দেখা গেলেও বিরাট কোহলিকে নেটে দেখা যায়নি। অবশ্য তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছে গিয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে তাঁর পরিবার। ঘরের মাঠে যেমন স্পিন সহায়ক উইকেটে ভারতীয় দল খেলেছে, ঠিক সেই রকমই অস্ট্রেলিয়ার মাঠে একই ভাবে লড়াই করার জন্য তৈরি থাকতে হবে। অবশ্য ভারতীয় দল পাঁচটি টেস্ট ম্যাচের আগে কোনও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে না বলে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ভারতীয় দলের কাছে এখন একটাই লক্ষ্য, কমপক্ষে পাঁচটি টেস্টের মধ্যে চারটি ম্যাচে জয় তুলে নেওয়া। আর এই জয় তুলে নিতে পারলেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার ছাড়পত্র ভারতের ঝুলিতে এসে যাবে।

অস্ট্রেলিয়া সফরে রোহিত ব্রিগেড অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবে, এই বিশ্বাস রয়েছে। তবে, পার্থের পিচে অনেক সময় দেখা যায়, বলের গতি বদলে গেছে। আবার বাউন্সও হয়। সেই কারণে ভারতীয় দলের কাছে এই ব্যাপারটা অশনি সংকেতও হতে পারে।

ভারতীয় দল যেখানে অনুশীলন করছে, সেখানে সাধারণ মানুষের কোনও প্রবেশাধিকার নেই। এমনকি, সংবাদমাধ্যমকেও সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ অত্যন্ত গোপনে ভারতীয় দল অনুশীলন করছে পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে। এমনকি, গ্রাউন্ড স্টাফরা যখন প্রবেশ করছেন অনুশীলনের সময়, তখন তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল রেখে দেওয়া হচ্ছে। যাতে কোনওভাবেই কোনও ছবি প্রকাশ্যে না আসতে পারে। নেটে দেখা গেল, ঘাম ছড়াচ্ছেন কে এল রাহুল। ভারতীয় ‘এ’ ও অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের মধ্যে বেসরকারি টেস্টে রাহুল খেলেছেন। তবে রাহুলের ব্যাট থেকে রান সেই অর্থে আসেইনি। তবুও ভারতীয় দলের হেডস্যার গৌতম গম্ভীর রাহুলের প্রতি দৃষ্টি রেখেছেন। আসলে রাহুল যে কোনও পজিসনে ব্যাট করতে পারেন। রাহুলের সঙ্গে দেখা গেল শুভমন গিল ও যশস্বী জয়সওয়ালকে। তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ অনুশীলন করে গেলেন। ভারতীয় দল ছন্দে না থাকলেও গৌতম গম্ভীর মনে করছেন, ভারতীয় দল এবারে ঘুরে দাঁড়াবেই। যদি অধিনায়ক রোহিত শর্মা প্রথম ম্যাচে ওপেনার হিসেবে না খেলতে আসেন, তাহলে ওপেনার হিসেবে রাহুলকেই চিন্তা করেছেন কোচ গম্ভীর।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৪-১৫ সালে রাহুল ওপেন করেছিলেন এবং দ্বিতীয় ম্যাচে শতরান করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। আবার অনেকে ভাবছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যদি রাহুলকে ওপেনার হিসেবে ব্যাট করতে নামানো হয়, সেক্ষেত্রে বিরাট জুয়া হয়ে যাবে। রাহুলের এখন খারাপ সময় চলছে, সেটা কিন্তু ভাবতে হবে কোচকে। তবে, কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছেন, স্বাধীনভাবে খেলতে পারলে রাহুলের খেলার চাহিদাই বদলে যাবে। যতই সমালোচনা করা হোক না কেন, যদি তাঁর ব্যাট থেকে রান এসে যায়, তাহলে স্কোর বোর্ডটা ভালো জায়গায় পৌঁছে যাবে।

আবার বলতে পারা যায়, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পরপর সিরিজ জিতেছে ভারত। ২০১৮-১৯ সালে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি জিতে নেয় ভারত। ২০২০-২১ সালে আজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে ভারতীয় দল দ্বিতীয়বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জেতে। আর রোহিত শর্মার নেতৃত্বে এবার জিততে পারলে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের হ্যাটট্রিক হবে। তবে এবারের পরিস্থিতি একটু অন্যরকম। ভারতীয় ক্রিকেটাররা মানসিক দিক দিয়ে এখনও পিছিয়ে রয়েছেন। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আত্মবিশ্বাসকে হাতিয়ার করতে হবে ভারতীয় দলের প্রতিটি খেলোয়াড়কে। তাই খোলামেলা আলোচনার মধ্য দিয়ে ভারতীয় দলের ড্রেসিং রুমকে সবসময়ই ভালো খেলার জন্য একে অপরকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। তাই সিনিয়রদের পাশাপাশি, তরুণ ক্রিকেটারদের সাহস দিতে হবে লড়াই করার জন্য। যে যতই সমালোচনা করুক না কেন, সেই সমালোচনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা লড়াকু মনোভাব নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ক্রিকেট যুদ্ধে নামবে।