খোলা চিঠিতে লেখা হয়, ‘আমরা গভীরভাবে দুঃখিত যে কানাডাবাসীরা এখন কানাডার হিন্দু মন্দিরে আসতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। পুলিশের কাছে আমাদের আবেদন, ব্র্যাম্পটন ত্রিবেণী মন্দিরের বিরুদ্ধে যে প্রচার করা হচ্ছে এবং যেভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে তার মোকাবিলা করা হোক। কানাডার হিন্দু সম্প্রদায় এবং সাধারণ জনগণকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হোক।’
১৭ নভেম্বর ওই মন্দিরে ভারতীয় কনস্যুলেট আয়োজিত অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু মন্দির পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে পুলিশের কাছ থেকে হামলা হতে পারে খবর পেয়ে এটি বাতিল করা হয়েছে। পুলিশ প্রধান নিশান দুরাইপ্পের পরামর্শ মাফিক ব্র্যাম্পটন ত্রিবেণী মন্দিরের ভক্ত, দর্শনার্থী এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত। আমরা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কাছেও ক্ষমাপ্রার্থী।’
গত ৪ নভেম্বর খলিস্তানিপন্থী একটি দল শিখ দাঙ্গার ৪০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে মন্দিরের কাছে একটি বিক্ষোভের আয়োজন করে। তারা ব্রাম্পটনের হিন্দু সভা মন্দিরে বেশ কয়েকজন হিন্দু ভক্তকে আক্রমণও করেছিল। হিন্দু ভক্তদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ, যার হাত থেকে রেহাই মেলেনি মহিলা এবং শিশুদেরও।
টরন্টোর ভারতীয় হাই কমিশন জানায়, মন্দির প্রাঙ্গনেই একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। মন্দির কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রতি বছরই সেখানে শিবিরের আয়োজন করে ভারতীয় হাই কমিশন। কানাডা এবং ভারতীয় নাগরিকদের জন্য স্থানীয় স্তরে লাইফ সার্টিফিকেট তৈরি করা হয় এই শিবিরে । এবছরও শিবির চলাকালীন যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন থাকে তার জন্য আগে থেকেই প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও তাদের সামনেই মন্দিরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় খলিস্তানিরা। ভারতীয় হাই কমিশনের তরফে বলা হয়, ‘গোটা ঘটনাটি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবেও আমরা চিন্তিত। কনসুলেটের ক্যাম্পে এইভাবে হামলা হওয়াটা অত্যন্ত হতাশাজনক।’
আগামী ১৭ নভেম্বর ফের মন্দির প্রাঙ্গনে স্থানীয় স্তরে লাইফ সার্টিফিকেট দেওয়ার আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু হিন্দু সভা মন্দিরের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। ভারত এই ঘটনার নিন্দা করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একে ‘ইচ্ছাকৃত আক্রমণ’ এবং ‘ভারতের কূটনীতিকদের ভয় দেখানোর কাপুরুষোচিত প্রচেষ্টা’ বলে নিন্দা করেছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও জটিল হয়ে উঠেছে ভারত – কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। প্রশ্ন উঠছে, আগে থেকে বলে রাখা সত্ত্বেও কেন কানাডার মন্দিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।