• facebook
  • twitter
Thursday, 14 November, 2024

শেখ হাসিনাকে পেতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড অ্যালার্ট নোটিস’ জারি করতে চায় বাংলাদেশ

আইনি উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ইতিমধ্যেই নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ ইন্টারন্যাশন ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি)-এ বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর শেখ হাসিনা এবং বিদেশে পলাতক আওয়ামী লীগের নেতা মন্ত্রীদের ধরতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড নোটিস’ জারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনা সহ পলাতক আসামীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার। এবং তাঁদের বিচারে হাজির করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

আইনি উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ইতিমধ্যেই নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ ইন্টারন্যাশন ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি)-এ বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। আসলে বিশ্বের জনমতকে বিভ্রান্ত করতেই এ কাজ আওয়ামী লীগ করেছে এবং তাকে গুরুত্ব দেওয়ার মতো কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আইসিসি-তে আওয়ামী লীগের এই অভিযোগ গৃহীত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কারণ, এটা কোনও মামলা নয়, এটা শুধু একটা পিটিশন লিখে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এটা যে কেউ করতে পারে। বিশ্বের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তারা মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে এবং আত্মরক্ষা করতে চাইছে, বলেন আসিফ নজরুল।

এবিষয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের নির্দেশ পেলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ইন্টারপোলের মাধ্যমে নোটিস জারি করার অর্থ, ইন্টারপোলের সদস্য প্রতিটি রাষ্ট্রকে সতর্ক করে দেওয়া এবং পলাতক অভিযুক্তকে সদস্য রাষ্ট্রগুলি নিজেদের তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তাঁর খোঁজ চালাবে। এবং গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠাবে। প্রসঙ্গত, গত আগস্টে হাসিনা দেশ ছাড়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৮টি খুনের অভিযোগ। হাসিনা সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

অন্যদিকে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রবিবার এই প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ঢাকায় শহীদ নূর হোসেন চত্বর থেকে মিছিল শুরু করার কথা ছিল বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটেয়। কিন্তু সেই মিছিল হতেই দিল না পুলিশ। সূত্রের খবর, শনিবার থেকেই পুলিশ শুরু করেছিল ধরপাকড়। আওয়ামী লীগের ১০ জন সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ বা বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল।

জানা যায়, রবিবার সকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে তাঁদের ওপর চড়াও হন একদল ক্ষিপ্ত জনতা। সূত্রের খবর, ওই জনতার মুখে ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জবাই কর’ স্লোগান শোনা গিয়েছে। এছাড়াও ইউনুস সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা সজীব ভুঁইয়া তাঁদের সরকারের অবস্থানও স্পষ্ট করে দেন। সমাজ মাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘গণহত্যাকারী কেউ কর্মসূচি করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’ এদিন অভিযোগ ওঠে, আক্রান্ত পক্ষেরই বেশ কয়েকজনকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির পাল্টা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও গণ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল রবিবারেই। দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়েছিল এই সমাবেশ। ভিড়ও হয়েছিল যথেষ্ট। সেখানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হতে থাকে।