• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘বার্ধক্য ভাতা’-র টাকাও , তদন্তভার যেতে পারে সিআইডি-র হাতে 

ট্যাবের টাকা নিয়ে এই শোরগোলের মাঝখানেই রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রকল্পের টাকা নিয়েও এবার অভিযোগ উঠল। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, শুধু ট্যাবের টাকাই নয়, রাজ্য সরকারের লক্ষ্মী ভান্ডার-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও পৌঁছে গেছে হ্যাকারদের অ্যাকাউন্টে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি উপভোক্তার ব্যক্তিগত তথ্যও হ্যাকারদের হাতে চলে গেছে ? 

xr:d:DAFwLYn03CE:3,j:165912106069518368,t:23100306

রাজ্যের পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার টাকা প্রতারকদের দখলে এমন অভিযোগে শোরগোল শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা কেন পৌঁছয়নি তা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। রাজ্যের সমস্ত জেলায় মোট কতজন পড়ুয়ার কাছে এখনও পর্যন্ত ট্যাব কেনার টাকা পৌঁছয়নি তার তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে বিকাশ ভবন। সোমবারের মধ্যেই এই তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে রাজ্যের সমস্ত ডিআই-দের। ট্যাবের টাকা নিয়ে এই শোরগোলের মাঝখানেই রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রকল্পের টাকা নিয়েও এবার অভিযোগ উঠল। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, শুধু ট্যাবের টাকাই নয়, রাজ্য সরকারের লক্ষ্মী ভান্ডার-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও পৌঁছে গেছে হ্যাকারদের অ্যাকাউন্টে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি উপভোক্তার ব্যক্তিগত তথ্যও হ্যাকারদের হাতে চলে গেছে ? 

 
পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত ২২০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ৪টি এবং পূর্ব বর্ধমানের ২টি  স্কুলের ছাত্রদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা না ঢোকার ঘটনার তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশ। ইতিমধ্যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ওই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, শুধু ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকাই নয়- ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘কৃষক বন্ধু’, ‘বার্ধক্য ভাতা’সহ রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের টাকা প্রতারকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের দখলে। 
 
রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁরা সঠিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর সরকারি পোর্টালে আপডেট করার পরও কীভাবে তা বদলে গেল তা তাঁদের অজানা। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষা দপ্তরের তরফে ইতিমধ্যে এফআইআর-ও করা হয়েছে।   
 
এখনও পর্যন্ত ২২০টি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সরকারের তরফে চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা পাচার হচ্ছিল। এর মধ্যে ৮৪টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে রাজ্য সরকার। এই অ্যাকাউন্টগুলির অধিকারী কারা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।তদন্তকারীদের হ্যাকাররা সরকারি পোর্টালের তথ্য বদলে দিয়ে থাকতে পারে। তাঁদের আরও দাবি, বিভিন্ন প্রকল্পের বিরাট অঙ্কের টাকা হ্যাকারদের দখলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, সরকারি পোর্টাল থেকে কি তাহলে উপভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্যও এখন হ্যাকারদের আওতায় ? 
 
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সিপিএম ও বিজেপি। সিপিএমের অভিযোগ, হ্যাকারদের নামে টাকা সরাচ্ছে তৃণমূল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিম বলেন, ‘হ্যাকার – ট্যাকার বাজে কথা। এই টাকা তৃণমূল নেতাদের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। পুলিশের ক্ষমতা থাকলে সত্যি ঘটনা তদন্ত করে সামনে আনুক।’  
 
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, ‘গোটা রাজ্যই চোরে ভরে গেছে। কেন্দ্রের টাকা বন্ধ হয়েছে। এবার রাজ্যের মানুষদের করের টাকা হ্যাকারের নাম করে চুরি করছে তৃণমূল।’
 
তদন্তকারীদের অনুমান, এই বিরাট অঙ্কের প্রতারণার নেপথ্যে রয়েছে সাইবার অপরাধে যুক্ত পেশাদারি এক বা একাধিক দল। এই সম্ভাবনা ক্রমেই জোরালো হওয়ায় তোলপাড় রাজ্য প্রশাসনে।নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে এই টাকা লোপাটের ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হচ্ছে সিআইডি-র হাতে।