• facebook
  • twitter
Thursday, 14 November, 2024

‘সিপিএম জল্লাদ’, নৈহাটিতে নির্বাচনী প্রচারে অনিতা থেকে অতসী-প্রসঙ্গ সাংসদ পার্থ-কণ্ঠে

পার্থর পাশাপাশি খাদ্যমন্ত্রী রথীন ভৌমিকও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন সিপিএম এবং বিজেপিকে।

নির্বাচনী প্রচারে ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক। নিজস্ব চিত্র।

‘৭০ বছরের মাতৃসম রাধারানী আজও মুক্তি পায়নি সিপিএমের জল্লাদদের হাত থেকে!’, নির্বাচনী প্রচার থেকে বাংলার বুকে সিপিএম-শাসনের স্মৃতিচারণা করলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক। আরজি কর আবহে রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে বাম-শাসনের ‘কালো দিন’ স্মরণ করিয়ে সাংসদ বলেন, ‘কোনো রাজ্যে দেখাতে পারবেন নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পথে নেমেছেন? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল করেছেন। আমি সিপিএমকে বলছি, ওই সরকারের আমলে যখন স্বাস্থ্যকর্মী অনিতা দেওয়ানকে ধর্ষণ-খুন করা হয়েছিল তখন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীই বলেছিলেন, এমন ঘটনা ঘটেই থাকে। নদীয়ার এক মূক ও বধির নারীর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিচার চাইতে মমতা বন্দোপাধ্যায় রাইটার্স বিল্ডিং-এ জ্যোতি বসুর কাছে গিয়েছিলেন। তাঁকে টানতে টানতে বের করে দেওয়া হয়েছিল। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনে তাপসী মালিক থেকে ৭০ বছরের রাধারানীকে ধর্ষণ করেছিল সিপিএমের হার্মাদরা! তোমরাই বিচার চাইছো?’

প্রসঙ্গত, শুক্রবার নৈহাটি উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-এর সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারে পরপর হাইভোল্টেজ বক্তব্য পেশ করেন পার্থ ভৌমিক এবং রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। আরজি কর কাণ্ডে রাজ্যের শাসকদলের দিকেই আঙ্গুল তুলেছে বিরোধী শিবির, তবে সিবিআই-ইঙ্গিত শাসক বিরোধী নয়। এই প্রেক্ষাপটে পার্থর বক্তব্য, ‘পান থেকে চুন খসলে তৃণমূলের নেতাদের বাড়িতে সিবিআই হানা দেয়, তাহলে আরজি কর কাণ্ডে শাসকদলের ভুল থাকলে সিবিআই ছেড়ে দিত?’ পার্থর স্পষ্ট দাবি, ‘সিবিআই চার্জশিটে কেবল কলকাতা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তের নাম রয়েছে বলেই এখন সিপিএম-বিজেপি মূল অপরাধীর সমর্থনে মিছিল করছে।’ এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রীও বলেছেন, ‘কলকাতা পুলিশের তদন্তে যে ত্রুটি ছিল না, তার প্রমাণ সিবিআই চার্জশিট।’

পার্থর পাশাপাশি খাদ্যমন্ত্রীও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন সিপিএম এবং বিজেপিকে। সিপিএমের ভীরুতার সাক্ষ্য তুলে রথীন মঞ্চ থেকে বলেন, ‘আমি বামপন্থীদের বলবো, এতই সাহস ছিল তাহলে নৈহাটিতে লিবারেশনের প্রার্থী দেওয়া হলো কেন? আপনারা তো সাহস করে দাঁড়াতে পারতেন। সৎ সাহসের অভাবে পাঁঠা হিসাবে বলি করার জন্য অন্য প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।’ পার্থর ভাষায়, ‘এদের (সিপিএম) কোনো নীতি নেই, নকশালের সঙ্গে হাত ধরা থেকে কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট আবার কখনও বিচ্ছেদ!’ এরপরই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে রথীন বলেন, ‘বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চেয়েছে বিজেপি’।

সনৎ দে-র সমর্থনে ভোট-প্রার্থণা করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইভিএমে ভুল করে পদ্মে ছাপ পড়লেই ঘরে কেউটে সাপ প্রবেশ করবে কারণ পদ্মের নিচেই কেউটে থাকে।’ সর্বোপরি বক্তব্যের প্রতিটি মুহূর্তে সিপিএম-বিজেপির বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন পার্থ এবং রথীন যৌথভাবে। ‘মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক প্রকল্প ভুলিয়ে দিতে কুৎসাকে হাতিয়ার করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সাদা শাড়িতে কালো দাগ লাগাতে চেয়েছে বিরোধীরা’ স্পষ্ট অভিযোগ সাংসদের। এদিনের নির্বাচনী প্রচারে সাংসদ পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম, তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারী, পানিহাটির বিধায়ক তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ।