ফের হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ল মণিপুরে। হিংসার জেরে জিরিবাম জেলার গ্রামে ১ মহিলার মৃত্যুও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কুকি-জো সংগঠনের দাবি, সন্দেহভাজন সশস্ত্র মেইতেই জঙ্গীরা গ্রামে হামলা চালিয়ে ওই মহিলাকে খুন করে।যদিও মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে জিরিবাম জেলার জাইরন গ্রামে। জঙ্গিরা গ্রামে ঢুকে অন্তত পক্ষে ৬টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। গ্রামবাসীরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গিয়ে পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেন। মনিপুরের উপজাতি সংগঠন আদিবাসী উপজাতি লিডার্স ফর্ম শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সশস্ত্র মেইতেই গোষ্ঠী আরামবাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফ গোষ্ঠী জিরিবামের জাইরন গ্রামে হামলা চালায়।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘প্রায় এক ঘন্টা ধরে তাদের সঙ্গে গুলি বিনিময় চলে। হামলার সময় ১০টিরও বেশি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সাংকিম নাম এক মহিলাকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। ওই মহিলার বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
গতবছর মে মাস থেকে জাতিদাঙ্গায় বিপর্যস্ত মণিপুরে ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন হামলার ঘটনায়। ২০২৩ সালের ৩ মে আদিবাসী সংহতি মিছিলের পর থেকে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মণিপুর। নাগা ও কুকি-মেইতেই সংঘর্ষে বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।এদিকে এই হিংসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বেধেছে।আইটিএলএফ মণিপুরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় দায়ী করেছে বিজেপিকে। মেইতেই জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ করেছে উপজাতি সংগঠনগুলির মূল সংগঠন আইটিএলএফ। আইটিএলএফ-এর দাবি, ‘সরকারকে আরামবাই সন্ত্রাসবাদীদের মতো গোষ্ঠীগুলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। মেইতেই অধ্যুষিত অঞ্চলে কঠোর হাতে মেইতেই জঙ্গি শিবিরগুলির মোকাবিলা করতে হবে। প্রসঙ্গত, রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল সহ উপত্যকা এলাকায় মেইতেই গোষ্ঠী জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ। অন্যদিকে, পার্বত্য এলাকায় বসবাস নাগা ও কুকিদের, যারা জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ।
আইটিএলএফ নেতৃত্বের অভিযোগ, ‘আমাদের জমিতে অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। কুকি-জো জনগণের উপর হিংসা তাঁর মনোযোগের বাইরে।’