• facebook
  • twitter
Thursday, 14 November, 2024

মমতার নির্দেশে বীরভূম জেলা কোর কমিটির বৈঠকে থাকবেন অনুব্রতও

অনুব্রত মণ্ডল জামিনে ছাড়া পেয়ে জেলায় ফিরে একক সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা করায়, দলীয়স্তরেই কোর কমিটির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কি কোনও চোরা স্রোত তৈরী হয়েছে ? এমন একটা সম্ভাবনার কথা বার বার উঠে এসেছে অনুব্রত সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কাজকর্ম শুরু করে দেওয়ার পর থেকেই। সম্প্রতিই তিহাড় জেল থেকে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

 

গোরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনুব্রত মণ্ডল তিহাড় জেলে বন্দি থাকার সময়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুব্রত মণ্ডলকে দলের জেলা সভাপতির পদে রেখে জেলায় দল পরিচালনার জন্য একটি কোর কমিটি গঠন করে দেন এবং তিনি নিজে দলের জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকা সত্ত্বেও দলের অপর নেতা ফিরহাদ হাকিমকে বীরভূম জেলায় দলীয় কাজকর্ম দেখাশোনা করার ভারও দেন। দলনেত্রীর গড়ে দেওয়া জেলা কোর কমিটিতে রয়েছেন রামপুরহাটের বিধায়ক ড. আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফায়েজুল হক (শেখ কাজল) ও সুদীপ্ত ঘোষ। এই কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিকাশ রায়চৌধুরীকে।

 

অনুব্রত মণ্ডল জামিনে ছাড়া পেয়ে জেলায় ফিরে একক সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা করায়, দলীয়স্তরেই কোর কমিটির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে যায়। অনুব্রত মণ্ডল বোলপুরের দলীয় কার্যালয় থেকে কোর কমিটির সদস্যদের ছবি সরিয়ে দিয়ে সেখানে কেবলমাত্র নিজের ছবি রাখায় এই প্রশ্ন আরও জোরালো হয় যে, তা’হলে কী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া কোর কমিটির অস্তিত্বের বিলোপ ঘটিয়ে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হাতেই জেলায় দল পরিচালনার একক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ? অপরদিকে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, দল পরিচালনার জন্য জেলায় কোর কমিটি থাকলে তার সদস্য সংখ্যা ছয় থেকে বাড়িয়ে পনেরো করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষণে মনে করা হয় যে, বর্তমান কোর কমিটির উপরে অনুব্রত মণ্ডলের যে কর্তৃত্ব রয়েছে, তাকে আরও শক্তপোক্ত করতেই অনুব্রত মণ্ডল কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির উপরে জোর দিচ্ছেন। আবার রাজনৈতিক বিশ্লেষণে এমনটাও বলা হয় যে, অনুব্রত মণ্ডল যে হেতু কোর কমিটির সদস্য নন, তাই তিনি কী কোর কমিটির বৈঠকে আদৌ উপস্থিত থাকতে পারবেন ?

 

এই রাজনৈতিক সমীকরণ যখন চলছে তখনই বৃহস্পতিবার ৭ নভেম্বর জানা যায় যে, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে কোন স্তরে কাদের বদল করা উচিৎ তার একটি তালিকা তুলে দিয়েছেন। তিনি বিদেশে চোখের অস্ত্রোপচার করতে যাওয়ার আগেই এই তালিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়ে গিয়েছিলেন। এটি প্রকাশ্যে আসতেই আর বিলম্ব না করে বীরভূম জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী শুক্রবার ৮ নভেম্বর বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন যে, শনিবার ১৬ নভেম্বর বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে বেলা ৩ টের সময় জেলা কোর কমিটির বৈঠক বসবে। জেলায় দলের কোর কমিটির সব সদস্যদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, দলনেত্রীর পক্ষ থেকে কোর কমিটির ওই বৈঠকে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। ওই বৈঠকে কি অনুব্রত মণ্ডল কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে যে মত প্রকাশ করেছেন তা নিয়ে কী আলোচনা হবে ? এ ব্যাপারে বিকাশ রায়চৌধুরী স্পষ্টভাবে কোনও মত প্রকাশ না করে জানিয়ে দেন, জেলা কোর কমিটির বৈঠকে যা নিয়েই আলোচনা হোক না কেন, তা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেওয়া হবে। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা তিনিই নেবেন ।