‘বোঝাপড়া’ করে যৌন হেনস্থার মামলা খারিজ করা যায় না। অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তর মধ্যে এই বোঝাপড়া হয়ে যাওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রেই মামলা তুলে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, এই ধরণের বোঝাপড়া বা সমঝোতা হয়ে গেলেও যৌন হেনস্থার মামলা বাতিল হয়ে যেতে পারে না। এক মামলায় রাজস্থান হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে এই বার্তা দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। রাজস্থান হাইকোর্ট যৌন হেনস্থার অভিযোগের মামলায় এক শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়।
যৌন হেনস্থার মামলায় অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত পক্ষ আদালতের বাইরে আর্থিক সমঝোতা করে নেয়। ধর্ষণের মামলাতেও বহু ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বাইরে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ফয়সালা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে আবার বিয়ের শর্তে আপস করে নেওয়া হয়। এরপর আদালতে গিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়। এই নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালে। রাজস্থানের গঙ্গাপুর সিটির এক দলিত পরিবারের অভিযোগ করেছিল, তাদের নাবালিকা মেয়েকে যৌন হেনস্থা করা হচ্ছে। একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগ মতো মামলা দায়ের হয় পকসো আইনের আওতায়। নাবালিকার বক্তব্যও রেকর্ড করা হয়।
এরপরই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। অভিযুক্ত শিক্ষক বিমল কুমার গুপ্ত নাবালিকার পরিবারের তরফ থেকে একটি বিবৃতি পান যেখানে লেখা ছিল , নাবালিকার পরিবার ভুল বোঝাবুঝির কারণে পুলিশে অভিযোগ করে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক তা তারা চায় না। পুলিশ এই বক্তব্য গ্রহণ করে। নিম্ন আদালতে বক্তব্য পেশ হলে তা খারিজ হয়। এরপর ওই শিক্ষক বিবৃতি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট ওই বিবৃতি গ্রহণ করে এবং এফআইআর বাতিল করার নির্দেশ দেয়। বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হন এক সমাজকর্মী। রামজিলাল বৈরা নামে ওই সমাজকর্মী এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সুপ্রিম কোর্ট এদিন রাজস্থান হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ খারিজ করে দেয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সিটি রাজীবকুমার এবং পিভি সঞ্জয় কুমার রায় দিয়ে বলেন, সত্য অস্বীকার করা নির্দেশ বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। আইনানুসারে এফআইআর ও ফৌজদারি কাজ চালানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তবে এই মামলার সত্যাসত্য বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হবে না বলে আদালত জানিয়েছে।