চলতি নভেম্বর মাসেই বাঁকুড়া থেকে ভায়া বর্ধমান হয়ে হাওড়ার মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এরকমই সম্ভাবনার কথা জানা গেল পূর্ব রেল সূত্রে। বর্তমানে বাঁকুড়া থেকে বর্ধমানের মশাগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করে। আর মাত্র ১০০ মিটার রেলপথ সংযোগ ঘটে গেলে বর্ধমান – হাওড়া কর্ড লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে ওই রেলপথ। এরই মধ্যে মশাগ্রামে হাওড়া – বর্ধমান লাইনের সঙ্গে সংযোগের কাজও প্রায় শেষ। এবার হবে সিগান্যালিং ব্যাবস্থার কাজ।
বাঁকুড়া থেকে বর্ধমানের সেহারাবাজার পর্যন্ত ব্রিটিশ আমলে ন্যারোগেজ লাইন চালু হয়েছিল। পরবর্তীকালে মশাগ্রাম পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইনের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০০০ সালে বৈদ্যুতিকরণের কাজ শুরু হলেও ২০০৫ সালে কাজ শেষ হয়। তারপর দাবি উঠে, এই লাইন হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখার সঙ্গে যুক্ত করা হোক। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তথা ওই এলাকার জননেতা অপার্থিব ইসলাম বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় যাত্রীদের সুবিধার কথা গুরুত্ব দেন। মূলত তাঁর প্রচেষ্টায় এই রেল প্রকল্প এগিয়ে যায়। আজ তার সুফল পেতে চলেছেন সকলে। এক বাম নেতার দাবি, পূর্বে এই রেলপথ উন্নয়নে সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়াও নানাভাবে চেষ্টা করেছিলেন।
এদিকে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের এক আধিকারিক অনিশ কুমার সিনহা এরই মধ্যে চুড়ান্ত পর্বে কাজের জন্য নোটিশ জারি করেছেন। ওই নোটিশে বলা হয়, নভেম্বর মাসের ১৪ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত মশাগ্রাম স্টেশনের কাছে হাওড়া – বর্ধমান কর্ড লাইনের সংযোগ করার কাজ চূড়ান্ত হবে। এজন্য কর্ড ও মেন শাখায় বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল থাকবে। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, দুটি লাইনে ১৬ টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল থাকবে। এছাড়াও দুটি লাইনে একাধিক ইএমইউ ট্রেন বাতিল করা হবে। এলাকার যাত্রীদের আশা, এ মাসেই চালু হবে বাঁকুড়া থেকে হাওড়া পর্যন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এই লাইনের ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেলে চার পাঁচটি জেলার গ্রামীণ এলাকার প্রান্তিক মানুষজন দারুন সুবিধা পাবেন। বিশেষ করে কৃষক, শ্রমিক শ্রেণীর মানুষজন। বাঁকুড়া তো বটেই, বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর লাগোয়া একাধিক গ্রাম, পুরুলিয়া, হুগলি, হাওড়া জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা আছে বলে দাবি অনেকেরই। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় বলেন, এই শাখায় ১৮০ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল হলে কম ভাড়ায় অতি সাধারণ যাত্রীরা যাতায়াতের সুবিধা পাবেন।