ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনের আগে বড় ধাক্কা খেল রাজ্যের শাসকদল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। রবিবার শহিদ সিদো-কানহুর বংশধর এবং হেমন্ত সোরেনের প্রস্তাবক মণ্ডল মুর্মু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, লক্ষ্মীকান্ত বাজপেয়ী, নিশিকান্ত দুবে এবং সাঁওতাল পরগনার বিজেপি প্রার্থীদের উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মণ্ডল।
গত কয়েকদিন ধরেই ঝাড়খণ্ডের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মণ্ডল মুর্মু। এরই মধ্যে বিজেপি নেতা নিশিকান্ত দুবেও তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচনী প্রচারের মাঝপথে জেএমএম প্রস্তাবকের দল পরিবর্তনের কারণে জনগণের মধ্যে ভুল বার্তা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বারহেত বিধানসভা আসন থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মনোনয়নের পর তাঁর প্রস্তাবক মণ্ডল মুর্মুর গাড়িটি ডুমরিতে থামিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর গাড়ি তল্লাশি করা হয়। ঝাড়খণ্ডের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, গিরিডির ডুমরি চেক পয়েন্টে তল্লাশির সময় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানা হয়নি। চেকিংয়ের ভিডিও রেকর্ডিংও করা হয়নি। গাড়িতে আপত্তিকর জিনিস না পাওয়া গেলে কাউকে আটক করা যাবে না বলে জানান তিনি।
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এক্স হ্যান্ডেলে মণ্ডল মুর্মুর দলবদলের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, আজ সিধু-কানহুর বংশধর এবং হেমন্ত সোরেনের প্রস্তাবক মণ্ডল মুর্মু বিজেপি পরিবারে যোগ দিয়েছেন। ঝাড়খণ্ড সরকারের নীতির জন্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন আজ বিপন্ন। সেই কারণেই সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষজন বিজেপিতে যোগদান করছেন। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে উনি বিজেপির সদস্যপদ নিয়েছেন। এর পিছনে কোনও স্বার্থ নেই।
সাংবাদিকদের দুবে বলেন, সাঁওতাল পরগনার বাসিন্দাদের ৪৫ শতাংশ একটা সময় আদিবাসী ছিল। সেটা এখন ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। কিছু কিছু এলাকায় একজন মুসলিমও ছিলেন না, আজ গোটা গ্রামেই মুসলিমরা বসবাস করছেন।
আগামী ১৩ নভেম্বর এবং ২০ নভেম্বর, দুই দফায় ঝাড়খণ্ডের ৮১টি আসনে নির্বাচন। ভোটগণনা ২৩ নভেম্বর। ২.৬ কোটি ভোটার রয়েছেন, যার মধ্যে ১.৩১ কোটি পুরুষ ভোটার এবং ১.২৯ কোটি মহিলা ভোটার। ১১.৮৪ লক্ষ ভোটার প্রথমবারের জন্য ভোট দেবেন। যুব ভোটার রয়েছেন ৬৬.৮৪ লক্ষ ভোটার।
২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ৩০টি আসনে জয় পেয়েছিল। বিজেপির দখলে গিয়েছিল ২৫টি আসন। আর কংগ্রেস পায় ১৬টি আসন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি ৩৭টি আসন পেয়েছিল। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ১৯টি এবং কংগ্রেস ৬টি আসনে জিতেছিল।