• facebook
  • twitter
Sunday, 24 November, 2024

ভাইফোঁটা দিলেন মমতা

মমতার বাড়িতে ফোঁটা নিতে এসেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অনেকদিন ধরেই শোভন সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রতি বছরের মতো এ বছরের ভাইফোঁটাতেও একই চিত্র দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। তৃণমূল নেত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে রবিবার সকালে একে একে হাজির হন তৃণমূলের নেতারা। একাধিক মন্ত্রী, বিধায়ককেও এদিন তাঁর বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়। প্রতি বছরই ভাইফোঁটার দিন দলের মন্ত্রী, বিধায়ক ও নেতাদের বাড়িতে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। এবছরও তার ব্যতিক্রম হল না। এদিন মমতার বাড়িতে তাঁর ভাইদের পাশাপাশি হাজির হয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম থেকে শুরু করে সুব্রত বক্সী, জাভেদ খান, অরূপ বিশ্বাস সহ আরও অনেকে।

অসন্তোষ সরিয়ে রেখে প্রতিবারের মতো ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাবুনকেও ফোঁটা দিলেন মমতা। রবিবার দীর্ঘক্ষণ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, দিদির সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনের সময় হাওড়া সদর আসনকে কেন্দ্র করে ভাইয়ের সঙ্গে দুরত্ব তৈরি হয়েছিল তৃণমূল নেত্রীর। ওই আসনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন বাবুন। যদিও শেষ পর্যন্ত প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই আসনে প্রার্থী করে তৃণমূল। এরপরেই দলের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাবুন। ওই আসন থেকে নির্দল হিসেবে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছনে সরে আসেন। এর জেরে বাবুনের সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা। তাই এ বছর মমতা বাবুনকে ভাইফোঁটা দেবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছিল। এই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রবিবার বাকি ভাইদের সঙ্গে কালীঘাটের বাড়িতে যান বাবুন।

মমতার বাড়িতে ফোঁটা নিতে এসেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছে তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অনেকদিন ধরেই শোভন সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তবে ২০২১ সালেই তিনি বিজেপি দলও ত্যাগ করেন। তারপর থেকে তাঁকে আর সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময় তৃণমূলের একাধিক নেতার সঙ্গে তাঁকে মঞ্চ ভাগ করে নিতে দেখা গিয়েছে। ফিরেছে পুরনো সমীকরণ। এই বছরও মমতার বাড়িতে হাজির হয়েছেন তিনি। তাই শোভনের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের জল্পনা আরও বেড়েছে। এদিন আরজি কর ইস্যুতে মুখ খুলেছেন শোভন–বৈশাখী। তাঁদের দাবি, আরজি কর সহ অন্যান্য নারী নির্যাতনের ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে বিরোধীদের অপপ্রচার নিয়েও সরব হন তাঁরা।

অন্যান্য তৃণমূল নেতার পাশাপাশি এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে বের হতে দেখা যায়। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ফোঁটা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। তবে সেই বছরের অক্টোবরে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন রাজীব। তাঁর কথায়, ‘দিদি প্রত্যেক বছর ভাইদের ডাকেন। দিদির ভাইফোঁটার কোনও তুলনা নেই। প্রত্যেক বছর এই দিনটার জন্য মুখিয়ে থাকি যে কখন দিদির কাছে যাব। আর দিদির হাত থেকে ফোঁটা নেব।’ পাশাপাশি তিনি এদিন জানিয়েছেন, বিজেপিতে যোগ দিয়ে তিনি ভুল করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘প্রত্যেকের জীবনেই কখনও না কখনও অঘটন ঘটে। সেরকম আমার জীবনে কয়েকটা মাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তাঁর জন্য আমি অনুতপ্ত। আমি ক্ষমাও চেয়েছি। বারবার বলেছি, সেটা আমার ভুল ছিল। আর মানুষ যদি ভুলটাকে উপলব্ধি করে সঠিক পথে চলতে পারে, সেটাই আসল মানুষের পরিচয়।’

তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়। দলে তাঁর সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি সক্রিয়ই রয়েছি। এখন মেদিনীপুরের উপনির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছি। দল যখন যেখানে দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করেছি। আগামী দিনেও করব। দিদির সঙ্গেই থাকব। দিদি যা বলবেন করব।’

রাজীবের পাশাপাশি এদিন ফোঁটা নিয়ে মমতার কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরতে দেখা যায় পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। রবিবার তাঁকে অন্য মেজাজে দেখা গিয়েছিল। তাঁর পরনে ছিল ধুতি–পাঞ্জাবি। পাশাপাশি এদিন রাজনীতি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ফিরহাদ।