বর্তমানে অসম তৃণমূল কংগ্রেস সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল। তবে এই দুর্বলতা দূরীকরণে তৎপর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সম্প্রতি সভাপতিহীন অসম তৃণমূলের দায়িত্ব বাংলার আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের কাঁধে অর্পণ করে অসমের মাটিতে শক্তিশালী দলীয় সংগঠন তৈরীর প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সোমবার তৃণমূল আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং মন্ত্রী মলয় ঘটকের হাত ধরে অসমের তিন রাজনৈতিক নেতৃত্ব যোগদান করেন তৃণমূলে। দুলু আহমেদ, শিশির দেব কলিতা ও সঞ্জীব মহন্ত এদিন সুস্মিতা এবং মন্ত্রী মলয়ের থেকে দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগদান করেন। তাঁদের যোগদান শেষে সুস্মিতা দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘আমি তাঁদের তিনজনকেই দলে স্বাগত জানাই।
আশা করি, অসমে আমাদের সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৎপরতা এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় আজ আমরা মেঘালয়ে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছি। আগামীতে অসমে পঞ্চায়েত এবং বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, সেখানে তৃণমূল লড়বে।’ তবে আগামী লড়াইয়ে অসম তৃণমূল নিজ শক্তি বৃদ্ধি করতে কি ‘আসন-সমঝোতা’র পথে হাঁটতে পারে? সেক্ষেত্রে ‘জোট-সঙ্গী’ কংগ্রেসই কি হবে অসম তৃণমূলের বন্ধু? এ প্রসঙ্গে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করেছেন সুস্মিতা দেব। তিনি বলেন, ‘অসমে তৃণমূল আসন সমঝোতার পথে হাঁটবে কি না তার সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তবে আমাদের (তৃণমূল) পক্ষ থেকে কখনোই আসন-সমঝোতায় বিলম্ব হয়নি। রাজনৈতিক দল ভেদে পৃথক মতামত এবং সিদ্ধান্ত থাকে।’
এরপরই অভিষেক-যুক্তি শুনিয়ে সুস্মিতা দেব বলেন, ‘সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তৃণমূল কেবল বিজেপি শাসিত রাজ্যে গুরুত্ব আরোপ করবে। যে সকল রাজ্যে ইন্ডিয়ার শরিক দল ক্ষমতায়, তার প্রতিদ্বন্দ্বী আমরা নই। অবিজেপি শাসিত রাজ্যে তৃণমূলের আগামী কৌশল কি হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয় কারণ সেই সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ই।’
বাংলার মন্ত্রী তথা অসম তৃণমূলের ইনচার্জ মলয় ঘটকের বক্তব্য, ‘অসমের আগামী নির্বাচনের আগেই আমরা শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে চাই। আমরা আশাবাদী, আগামী কিছু দিনের মধ্যেই আমরা প্রদেশ সভাপতির নাম ঘোষণা করতে পারবো।’
তবে সুস্মিতা জানিয়েছেন, প্রদেশ সভাপতি পদের জন্য তিনজনের নামের তালিকা প্রস্তুত করে ইতিমধ্যেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। দীপাবলির পরই অসম তৃণমূলের সভাপতির নাম ঘোষণা করা হবে। রবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ সফরে এসে ‘২৬-এ পরিবর্তনের ডাক’ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মলয় ঘটক বলেন, ‘২০২৬ তো দূর, আগামী ৫০ বছরেও বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’