• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ক্যালসিয়াম কমলেই বিপদ

টানা বসে টিভি দেখাও খুব খারাপ অভ্যেস। সময় করে বারান্দা বা ছাদে হেঁটে আসুন। নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ব্যায়াম করুন। হাঁটু বা শরীরের কোনও হাড়ে ব্যথা হলেই কিন্তু ব্যায়াম বন্ধ করে দিন।

ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে মেয়েদের হাড়ের স্বাস্থ্য খারাপ হতে আরম্ভ করে। বয়স বাড়লে এই ঘাটতির কারণেই বাড়ে নানা শারীরিক সমস্যা।

বেশি বয়স পর্যন্ত সুস্থ ও সচল থাকতে হলে, হাড়ের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক আগে থেকে যত্নশীল হতে হবে। গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টিকর খাবারে ঘাটতি না থাকলে, বাচ্চার হাড়ের গঠনও সঠিকভাবে হয়। হাড়ের ভালো বৃদ্ধি হওয়া সম্ভব ৩০-৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত। এর মধ্যে যাদের বয়স, তারা রোজ হাড়ের যত্ন নিন।

গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের দেশে ১৪ থেকে ১৭ বছরের মেয়েদের মধ্যে, অন্তত ২০ শতাংশের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি রয়েছে। বয়স বাড়লে এই ঘাটতির কারণেই বাড়ছে নানা শারীরিক সমস্যা। প্যাকেজড এবং ফাস্ট ফুডের উপর অতিনির্ভরতা এই ক্ষতি ডেকে আনছে। ব্যস্ত জীবনশৈলীতে আমরা এখন পেট ভরানোর জন্য প্লাস্টিক র‍্যাপড খাবারই বেশি খেয়ে ফেলি। এতে শরীর প্রয়োজনমতো পুষ্টি পায় না। চাহিদা অনুযায়ী ক্যালসিয়ামেরও যোগান দেওয়া হয় না শরীরকে। ফলে দাঁত, নখ, হাড়ের উপর পড়ে এর নেতিবাচক প্রভাব।

হাড়ের ক্ষয়, ব্রিটল বোনস ও সহজে ফ্র্যাকচার হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে থাকে মধ্যবয়সে পৌঁছনোর আগেই। অস্টিয়োপোরোসিস-এর সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত শরীরে ব্যথা, মাসল্ ক্র্যাম্প হওয়া, ক্লান্তি, বুক ধড়ফড় করা- এসবই এই সমস্যার সাইড এফেক্টস। তখন ওষুধের উপর ভরসা করতে হয় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে।
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আরও কিছু কিছু বয়সজনিত কারণে হয়। মেনোপজের সময় অর্থাৎ ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে পৌঁছে যখন এস্ট্রোজেন হরমোন-এর স্তর কমতে থাকে, তখনও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয় শরীরে। এছাড়া হরমোনাল ডিসঅর্ডার-এর কারণে হাইপো থাইরয়েডইজম-এর মতো সমস্যার শিকার হলেও, ক্যালসিয়ামের ভয়াবহ ঘাটতি দেখা দেয়।

এই পরিস্থিতিতে ক্যালসিয়ামের ডোজ শুরু করার পাশাপাশি, ডায়েট-এ পরিবর্তন আনা এবং ক্যালসিয়াম-এ সমৃদ্ধ খাবারদাবার দৈনিক খাদ্য-তালিকায় শামিল করা জরুরি। পুষ্টিকর খাবার খান, তার মধ্যে যেন শাকসবজি আর ফল থাকে। ধূমপান আর কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ার অভ্যেস হাড়ের স্বাস্থ্যক্ষয়ের কারণ- এগুলি এড়িয়ে চলুন।

অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এক নাগাড়ে দশ-বারো ঘণ্টা বসে কাজ করা ক্ষতিকর। তাই কাজের চাপ যতই হোক না কেন, মাঝে মাঝেই উঠুন, খানিকটা হাঁটাচলা করুন, তারপর ফিরে এসে ফের কাজে বসুন।

টানা বসে টিভি দেখাও খুব খারাপ অভ্যেস। সময় করে বারান্দা বা ছাদে হেঁটে আসুন। নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় ব্যায়াম করুন। হাঁটু বা শরীরের কোনও হাড়ে ব্যথা হলেই কিন্তু ব্যায়াম বন্ধ করে দিন। আগে ঠান্ডা সেঁক দিয়ে ব্যথা কমান, বিশ্রাম নিন, তার পর আবার ব্যায়াম শুরু করবেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাবে হাড়ের যত্নের নিয়মও। ঘরের কাজ করার সময়, হাঁটু ততটাই ভাঁজ করুন, যতটা আপনি সাবলীলভাবে করতে পারেন। তার বেশি ঝোঁকার বা চাপ দেওয়ার দরকার নেই।