• facebook
  • twitter
Wednesday, 23 October, 2024

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’, বাতিল একাধিক ট্রেন

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে ‘দানা’। এই মুহূর্তে তার অবস্থান পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে ‘দানা’। এই মুহূর্তে তার অবস্থান পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, ওড়িশা উপকূলে এবং সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। আপাতত, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র অবস্থান পারা দ্বীপ থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে ও সাগরদ্বীপ থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে। যার জেরে বুধবার সকাল থেকেই দক্ষিনবঙ্গে আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সকাল থেকেই কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ মেঘলা।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, আজ অর্থাৎ বুধবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় শুরু হতে চলেছে বৃষ্টি। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকবে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। রাত যত গভীর হবে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে বলেই জানা যাচ্ছে। সঙ্গে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিমি বেগে বইতে পারে ঝড়ো হাওয়া।
শক্তি সঞ্চয় করে ক্রমশ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে ‘দানা’।আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অথবা শুক্রবার সকালের মধ্যে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের রুপ নিয়ে পুরী ও সাগর দ্বীপে মাঝে আছড়ে পড়তে পারে ‘দানা’।
আগামীকাল থেকে কলকাতা-সহ হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনাতে রয়েছে বৃষ্টির লাল সতর্কতা। এই কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি-ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও রয়েছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও রয়েছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস।
বৃহস্পতিবার পুরী থেকে সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে। সেই আশঙ্কায় গতকাল থেকেই পর্যটকশূন্য করা হয়েছে পুরী। পর্যটকদের গতকালই পুরী ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ওড়িশা সরকার।প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বৃহস্পতি ও শুক্রবার কোনও পর্যটক যেন পুরী ভ্রমণে না আসেন।
বাংলার পর্যটনকেন্দ্রের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলির দিকে নজর রাখছে রাজ্য প্রশাসন। সাগরপারে যেতে নিষেধ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই পর্যটকহীন সমুদ্রতীর।
ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র আশঙ্কায় ১৬০টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখা থেকে। বাতিল করা হয়েছে একাধিক দুরপাল্লার ট্রেনও।
রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে ট্রেন চলাচল। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে এই সময়ে কোনও ট্রেন ছাড়বেনা বলে জানানো হয়েছে।
শুধুমাত্র দক্ষিণ শাখাই নয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত শিয়ালদহ ও বারাসত থেকে হাসনাবাদ শাখাতেও সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে ট্রেন চলাচল।
লোকাল ট্রেনের পাশাপাশি রেলের পক্ষ থেকে বাতিল করা হয়েছে কয়েকটি দুরপাল্লার ট্রেনও। তালিকায় রয়েছে, কলকাতা-পুরী (২৪ অক্টোবর) এবং পুরী কলকাতা (২৫ অক্টোবর), ডিব্রুগড়-কম্যাকুমারী (২৩ অক্টোবর), কন্যাকুমারী-ডিব্রুগড় (২৩ অক্টোবর) সেকান্দ্রাবাদ-মালদহ (২৪ অক্টোবর), মালদহ-সেকেন্দ্রাবাদ (২৯ অক্টোবর), পুরী-জয়নগর (২৪ অক্টোবর) এবং শিয়ালদহ-পুরী দুরন্ত এক্সপ্রেস (২৩ অক্টোবর), পাটনা-পুরী এক্সপ্রেস (২৪ অক্টোবর), শিলচর-সেকেন্দ্রবাদ (২৩ অক্টোবর), বেঙ্গালুরু-মজফফরপুর (২৪ অক্টোবর), মালদহ-দিঘা (২৪ অক্টোবর), দিঘা-মালদহ (২৪ অক্টোবর), আসানসোল-হলদিয়া এবং হলদিয়া-আসানসোল (২৪ ও ২৫ অক্টোবর) বাতিল থাকছে।
ইতিমধ্যেই রেলের তরফ থেকে বিজ্ঞপতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে বাতিল করা হয়েছে ২৪ অক্টোবর ১৩১২৯ কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস এবং ১৩১৩০ খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস। যাত্রীদের সম্পূর্ণ টিকিট ভাড়া পদ্ধতি অনুযায়ী ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।